হেরো ওই বাড়িতেছে বেলা ,
বসে আমি রয়েছি একেলা।
ওই হোথা যায় দেখা সুদূরে বনের রেখা
মিশেছে আকাশনীলিমায়;
দিক হতে দিগন্তরে মাঠ শুধু ধূ ধূ করে,
বায়ু কোথা বহে চলে যায়।
সুদূর মাঠের পারে গ্রামখানি এক ধারে,
গাছ দিয়ে ছায়া দিয়ে ঘেরা।
কাননের গায়ে যেন ছায়াখানি বুলাইয়া
ভেসে চলে কোথায় মেঘেরা।
মধুর উদাস প্রাণে চাই চারি দিক-পানে,
স্তব্ধ সব ছবির মতন।
সব যেন চারি ধারে অবশ আলসভারে
স্বর্ণময় মায়ায় মগন।
গ্রামখানি, মাঠখানি, উঁচুনিচু পথখানি,
দু-একটি গাছ মাঝে মাঝে,
আকাশ-সমুদ্রে-ঘেরা সুবর্ণ দ্বীপের পারা
কোথা যেন সুদূরে বিরাজে।
কনকলাবণ্য লয়ে যেন অভিভূত হয়ে
আপনাতে আপনি ঘুমায়,
নিঝুম পাদপলতা, শ্রান্তকায় নীরবতা
শুয়ে আছে গাছের ছায়ায়।
শুধু অতি মৃদু স্বরে গুন গুন গান করে
যেন সব ঘুমন্ত ভ্রমর,
যেন মধু খেতে খেতে ঘুমিয়েছে কুসুমেতে
মরিয়া এসেছে কণ্ঠস্বর।
নীল শূন্যে ছবি আঁকা রবির-কিরণ-মাখা,
সেথা যেন বাস করিতেছি।
জীবনের আধখানি যেন ভুলে গেছি আমি,
কোথা যেন ফেলিয়ে এসেছি।