দাসীর হাতে দিয়ে ফাগের থালা
রানী বনে এলেন হেনকালে।
তান ধরিয়া ইমন - ভূপালীতে
বাঁশি তখন বাজছে দ্রুত তালে।
কেসর কহে, ‘ তোমারি পথ চেয়ে
দুটি চক্ষু করেছি প্রায় কানা!’
রানী কহে, ‘ আমারো সেই দশা।’
একশো সখী হাসিয়া বিবশা —
পাঠান - পতির ললাটে সহসা
মারেন রানী কাঁসার থালাখানা।
রক্তধারা গড়িয়ে পড়ে বেগে
পাঠান - পতির চক্ষু হল কানা।
বিনা মেঘে বজ্ররবের মতো
উঠল বেজে কাড়া - নাকাড়া।
জ্যোৎস্নাকাশে চমকে ওঠে শশী,
ঝন্ঝনিয়ে ঝিকিয়ে ওঠে অসি,
সানাই তখন দ্বারের কাছে বসি
গভীর সুরে ধরল কানাড়া।
কুঞ্জবনের তরু - তলে - তলে
উঠল বেজে কাড়া - নাকাড়া।
বাতাস বেয়ে ওড়না গেল উড়ে,
পড়ল খসে ঘাগরা ছিল যত।
মন্ত্রে যেন কোথা হতে কে রে
বাহির হল নারী - সজ্জা ছেড়ে,
এক শত বীর ঘিরল পাঠানেরে
পুষ্প হতে একশো সাপের মতো।