Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
কথা - হোরিখেলা,২
কথা
কেতুনপুরে রাজার উপবনে
তখন সবে ঝিকিমিকি বেলা।
পাঠানেরা দাঁড়ায় বনে আসি,
মুলতানেতে তান ধরেছে বাঁশি —
এল তখন একশো রানীর দাসী
রাজপুতানী করতে হোরিখেলা।
রবি তখন রক্তরাগে রাঙা,
সবে তখন ঝিকিমিকি বেলা।
পায়ে পায়ে ঘাগরা উঠে দুলে,
ওড়না ওড়ে দক্ষিনে বাতাসে।
ডাহিন হাতে বহে ফাগের থারি,
নীবিবন্ধে ঝুলিছে পিচকারি,
বামহস্তে গুলাব - ভরা ঝারি —
সারি সারি রাজপুতানী আসে।
পায়ে পায়ে ঘাগরা উঠে দুলে,
ওড়না ওড়ে দক্ষিনে বাতাসে।
আঁখির ঠারে চতুর হাসি হেসে
কেসর তবে কহে কাছে আসি,
‘ বেঁচে এলেম অনেক যুদ্ধ করি,
আজকে বুঝি জানে - প্রাণে মরি! '
শুনে রানীর শতেক সহচরী
হঠাৎ সবে উঠল অট্টহাসি।
রাঙা পাগড়ি হেলিয়ে কেসর খাঁ
রঙ্গভরে সেলাম করে আসি।
শুরু হল হোরির মাতামাতি,
উড়তেছে ফাগ রাঙা সন্ধ্যাকাশে।