আমাদের সেই তরুণ সাথি বসে থাকে ধুলায় আসন - তলে ;
কথাটি না ব ' লে।
দৈবে যদি একটি-আধটি চাঁপার কলি
পড়ে স্খলি
রানীর আঁচল হতে মাটির ‘ পরে,
সবার অগোচরে
সেইটি যত্নে নিয়ে তুলে
পরে কর্ণমূলে।
সভাভঙ্গ হবার বেলায় দিনের শেষে
যদি তারে বলি হেসে —
“ প্রদীপ জ্বালার সময় হল সাঁঝে
এখনো কি রইবে সভামাঝে। ”
সে হেসে কয়, “ সব সময়েই আমার পালা,
আমি যে ভাই, চাই নে বিজয়মালা। ”
আষাঢ় শ্রাবণ অবশেষে
গেল ভেসে
ছিন্নমেঘের পালে,
গুরু গুরু মৃদঙ্গ তার বাজিয়ে দিয়ে আমার গানের তালে।
শরৎ এল, শরৎ গেল চলে ;
নীল আকাশের কোলে
রৌদ্রজলের কান্নাহাসি হল সারা ;
আমার সুরের থরে থরে ছড়িয়ে গেল শিউলিফুলের ঝারা।
ফাগুন-চৈত্র আম-মউলের সৌরভে আতুর ,
দখিন হাওয়ায় আঁচল ভরে নিয়ে গেল আমার গানের সুর।
কণ্ঠে আমার একে একে সকল ঋতুর গান
হল অবসান।
তখন রানী আসন হতে উঠে ;
আমার করপুটে
তুলে দিলেন, শূন্য করে থালা,
আপন বিজয়মালা।