‘ দাদা ' বলে
গলা আমার জড়িয়ে ধরে বসত আমার কোলে।
নাম শুধালে শৈল আমায় বলত হাসি হাসি —
‘ আমার নাম যে দুষ্টু, সর্বনাশী! '
যখন তারে শুধাতেম তার মুখটি তুলে ধরে
‘ আমি কে তোর বল দেখি ভাই মোরে? '
বলত ‘ দাদা, তুই যে আমার বর! ' —
এমনি করে হাসাহাসি হত পরস্পর।
বিয়ের বয়স হল তবু কোনোমতে হয় না বিয়ে তার —
তাহে বাড়ায় অপরাধের ভার।
অবশেষে বর্মা থেকে পাত্র গেল জুটি।
অল্পদিনের ছুটি ;
শুভকর্ম সেরে তাড়াতাড়ি
মেয়েটিরে সঙ্গে নিয়ে রেঙ্গুনে তার দিতে হবে পাড়ি।
শৈলকে যেই বলতে গেলেম হেসে —
‘ বুড়ো বরকে হেলা করে নবীনকে, ভাই, বরণ করলি শেষে? '
অমনি যে তার দু-চোখ গেল ভেসে
ঝরঝরিয়ে চোখের জলে। আমি বলি, ‘ ছি ছি,
কেন, শৈল, কাঁদিস মিছিমিছি,
করিস অমঙ্গল। '
বলতে গিয়ে চক্ষে আমার রাখতে নারি জল।
বাজল বিয়ের বাঁশি,
অনাদরের ঘর ছেড়ে হায় বিদায় হল দুষ্টু সর্বনাশী।
যাবার বেলা বলে গেল, ‘ দাদা, তোমার রইল নিমন্ত্রণ,
তিন-সত্যি — যেয়ো যেয়ো। ' ‘ যাব, যাব, যাব বৈকি বোন। '
আর কিছু না বলে
আশীর্বাদের মোতির মালা পরিয়ে দিলেম গলে।