তপ্ত হাওয়া ব্যথিয়ে ওঠে আমের বোলের বাসে,
মাঠের পরে মাঠ হয়ে পার ছুটল হরিণ নিরুদ্দেশের আশে।
সম্মুখে তার জীবনমরণ সকল একাকার,
অজানিতের ভয় কিছু নেই আর।
ভেবেছিলেম, আঁধার হলে পরে
ফিরবে ঘরে
চেনা হাতের আদর পাবার তরে।
কুকুর - ছানা বারে বারে এসে
কাছে ঘেঁষে ঘেঁষে
কেঁদে-কেঁদে চোখের চাওয়ায় শুধায় জনে জনে,
‘ কোথায় গেল, কোথায় গেল, কেন তারে না দেখি অঙ্গনে। '
আহার ত্যেজে বেড়ায় সে যে, এল না তার সাথি।
আঁধার হল, জ্বলল ঘরে বাতি ;
উঠল তারা ; মাঠে-মাঠে নামল নীরব রাতি।
আতুর চোখের প্রশ্ন নিয়ে ফেরে কুকুর বাইরে ঘরে,
‘ নাই সে কেন, যায় কেন সে, কাহার তরে। '
কেন যে তা সে-ই কি জানে। গেছে সে যার ডাকে
কোনো কালে দেখে নাই যে তাকে।
আকাশ হতে, আলোক হতে, নতুন পাতার কাঁচা সবুজ হতে
দিশাহারা দখিন হাওয়ার স্রোতে
রক্তে তাহার কেমন এলোমেলো
কিসের খবর এল।
বুকে যে তার বাজল বাঁশি বহুযুগের ফাগুন-দিনের সুরে —
কোথায় অনেক দূরে
রয়েছে তার আপন চেয়ে আরো আপন জন।
তারেই অন্বেষণ।
জন্ম হতে আছে যেন মর্মে তারি লেগে,
আছে যেন ছুটে চলার বেগে,
আছে যেন চল-চপল চোখের কোণে জেগে।
কোনো কালে চেনে নাই সে যারে