Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
কালমৃগয়া - চতুর্থ দৃশ্য, ৭
কালমৃগয়া
প্রথম। চমকি উঠিছে হরিণী তরাসে!
মল্লার– কাওয়ালি
সকলে। আয় লো সজনি, সবে মিলে!
ঝর ঝর বারিধারা,
মৃদু মৃদু গুরু গুরু গর্জন,
এ বরষা-দিনে,
হাতে হাতে ধরি ধরি
গাব মোরা লতিকাদোলায় দুলে!
মৃদু মৃদু গুরু গুরু গর্জন,
এ বরষা-দিনে,
হাতে হাতে ধরি ধরি
গাব মোরা লতিকাদোলায় দুলে!
প্রথম। ফুটাব যতনে কেতকী কদম্ব অগণন।
দ্বিতীয়। মাখাব বরণ ফুলে ফুলে।
তৃতীয়। পিয়াব নবীন সলিল, পিয়াসিত তরুলতা–
চতুর্থ। লতিকা বাঁধিব গাছে তুলে।
প্রথম। বনেরে সাজায়ে দিব, গাঁথিব মুকুতাকণা
পল্লবশ্যাম-দুকূলে।
দ্বিতীয়। নাচিব, সখি, সবে নবঘন-উৎসবে
বিকচ বকুলতরু-মূলে!
দ্বিতীয়। মাখাব বরণ ফুলে ফুলে।
তৃতীয়। পিয়াব নবীন সলিল, পিয়াসিত তরুলতা–
চতুর্থ। লতিকা বাঁধিব গাছে তুলে।
প্রথম। বনেরে সাজায়ে দিব, গাঁথিব মুকুতাকণা
পল্লবশ্যাম-দুকূলে।
দ্বিতীয়। নাচিব, সখি, সবে নবঘন-উৎসবে
বিকচ বকুলতরু-মূলে!
ঋষিকুমারের প্রবেশ
গারা– কাওয়ালি
গারা– কাওয়ালি
ঋষিকুমার। কি ঘোর নিশীথ, নীরব ধরা!
পথ যে কোথায় দেখা নাহি যায়,
জড়ায়ে যায় চরণে লতাপাতা।
যাই, ত্বরা ক’রে যেতে হবে
সরযূতটিনী-তীরে–
কোথায় সে পথ—
ওই কল কল রব!
আহা, তৃষিত জনক মম,
যাই তবে যাই ত্বরা।
জড়ায়ে যায় চরণে লতাপাতা।
যাই, ত্বরা ক’রে যেতে হবে
সরযূতটিনী-তীরে–
কোথায় সে পথ—
ওই কল কল রব!
আহা, তৃষিত জনক মম,
যাই তবে যাই ত্বরা।
বনদেবীগণ। এই ঘোর আঁধার, কোথা রে যাস!
ফিরিয়ে যা, তরাসে প্রাণ কাঁপে!
স্নেহের পুতুলি তুই,
কোথা যাবি একা এ নিশীথে!
স্নেহের পুতুলি তুই,
কোথা যাবি একা এ নিশীথে!