Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
সোনার তরী - সুপ্তোত্থিতা,৪
সোনার তরী
ভুলিয়া গেছে, রয়েছে শুধু
অসীম বিস্ময়।
পারশে যেন বসিয়াছিল,
ধরিয়াছিল কর,
এখনো তার পরশে যেন
সরস কলেবর।
চমকি মুখ দু-হাতে ঢাকে,
শরমে টুটে মন,
কাটিছে দিন রাতি।
বসন্ত সে বিদায় নিল
লইয়া যূথী-জাতি।
সঘন মেঘে বরষা আসে,
বরষে ঝরঝর্।
কাননে ফুটে নবমালতী
কদম্বকেশর।
স্বচ্ছ হাসি শরৎ আসে
পূর্ণিমামালিকা।
সকল বন আকুল করে
শুভ্র শেফালিকা।
আসিল শীত সঙ্গে লয়ে
দীর্ঘ দুখনিশা।
শিশির-ঝরা কুন্দফুলে
হাসিয়া কাঁদে দিশা।
অসীম বিস্ময়।
পারশে যেন বসিয়াছিল,
ধরিয়াছিল কর,
এখনো তার পরশে যেন
সরস কলেবর।
চমকি মুখ দু-হাতে ঢাকে,
শরমে টুটে মন,
লজ্জাহীন প্রদীপ কেন
নিভে নি সেই ক্ষণ।
কণ্ঠ হতে ফেলিল হার
যেন বিজুলিজ্বালা,
শয়ন’পরে লুটায়ে পড়ে
ভাবিল রাজবালা—
কে পরালে মালা!
এমনি ধীরে একটি করে
কাটিছে দিন রাতি।
বসন্ত সে বিদায় নিল
লইয়া যূথী-জাতি।
সঘন মেঘে বরষা আসে,
বরষে ঝরঝর্।
কাননে ফুটে নবমালতী
কদম্বকেশর।
স্বচ্ছ হাসি শরৎ আসে
পূর্ণিমামালিকা।
সকল বন আকুল করে
শুভ্র শেফালিকা।
আসিল শীত সঙ্গে লয়ে
দীর্ঘ দুখনিশা।
শিশির-ঝরা কুন্দফুলে
হাসিয়া কাঁদে দিশা।