তিনকড়ি। ও দাদা! তোমার বদল ভেঙে নাও! তুমি সেখানে যাও, আমি বরঞ্চ এখানে একবার চেষ্টা দেখি।
কেদার। কেন রে, কী হয়েছে?
তিনকড়ি। ওরে বাস রে! সে কী খাতা! আমি তার মধ্যে সেঁধোলে আমাকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না! সেইটে পড়তে দিয়ে বুড়ো কোথায় উঠে গেল, আমি তো এক দৌড়ে পালিয়ে এসেছি।
বৈকুণ্ঠ। কী তিনকড়ি, পালিয়ে এলে যে!
তিনকড়ি। আপনি অতবড়ো একখানা বই লিখলেন আর এইটুকু বুঝলেন না!
বৈকুণ্ঠ। কেদারবাবু, যদি আপনি একবার আসেন তা হলে—
কেদার। চলুন। (স্বগত) রামে মারলেও মরব রাবণে মারলেও মরব, কিন্তু অবিনাশের ঐ একটি লাইন নিয়ে তো আর পারি নে!
অবিনাশ। কেদার, তুমি যাও কোথায়! দাদা, আমার সেই কাজটা—
বৈকুণ্ঠ। (রাগিয়া উঠিয়া) দিনরাত্তির তোমার কাজ! কেদারবাবু ভদ্রলোক, ওঁকে একটু বিশ্রাম দেবে না! তোমাদের একটু বিবেচনা নেই! আসুন কেদারবাবু।
কেদার। ওর নাম কী, চলুন।
অবিনাশ। মনোরমা তোমার কে হন তিনকড়ি?
তিনকড়ি। তিনি আমার দূরসম্পর্কে বোন হন, কিন্তু সে পরিচয় প্রকাশ হলে তিনি ভারি লজ্জা পাবেন।
অবিনাশ। তাঁর খুব লজ্জা, না তিনকড়ি?
তিনকড়ি। আমার সম্বন্ধে ভারি লজ্জা। কাউকে মুখ দেখাবার জো নেই।
অবিনাশ। না, তোমার সম্বন্ধে বলছি নে, আমার সম্বন্ধে। জান তো তিনকড়ি, আমার সঙ্গে তাঁর একটা সম্বন্ধ—
তিনকড়ি। ওঃ, বুঝেছি। তা তো হতেই পারে। আমার সঙ্গেও একটি কন্যের সম্বন্ধ হয়েছিল—বিবাহের পূর্বে সে তো লজ্জায় মরেই গেল।
অবিনাশ। আঃ, কী বল তিনকড়ি!
তিনকড়ি। শুধু লজ্জা নয়, শুনলুম তার যকৃৎও ছিল।
অবিনাশ। মনোরমার—
তিনকড়ি। যকৃতের দোষ নেই।
অবিনাশ। আঃ, সে কথা আমি জিজ্ঞাসা করছি নে, আমি হৃদয়ের কথা বলছি—
তিনকড়ি। মশায়, ও-সব বড়ো শক্ত শক্ত কথা, আমি বুঝি নে। মেয়েমানুষের হৃদয় তিনকড়ি কখনো পায় নি, কখনো