কেদার। (কৃত্রিম রোষে) দেখ্ তিনকড়ি! এতদিন, ওর নাম কী, আমার সহবাসে এবং দৃষ্টান্তে তোর এই, কী বলে, হেয় জঘন্য লুব্ধ প্রবৃত্তি ঘুচল না! আজ থেকে, ওর নাম কী, তোর মুখদর্শন করব না।
বৈকুণ্ঠ। আহা, আহা, রাগ করে যাবেন না কেদারবাবু—কেদারবাবু, শুনে যান।
তিনকড়ি। কিছু ভাববেন না। কেদারদাকে আমি বেশ জানি। ওকে আমি আধ ঘন্টার মধ্যে জুড়িয়ে ঠাণ্ডা করে আপনার
বৈকুণ্ঠ। হা হা হা হাঃ! বাবা, তোমার কথাগুলি বেশ। তা দেখো, এই তোমাকে কিঞ্চিৎ জলপানি দিচ্ছি। (নোট দিয়া) কিছু মনে কোরো না।
তিনকড়ি। কিচ্ছু না, কিচ্ছু না। এর চেয়ে বেশি দিলেও কিছু মনে করতুম না—আমার সেরকম স্বভাবই নয়।
ঈশান। বাবু! (বৈকুন্ঠ নিরুত্তর) —বাবু! (নিরুত্তর)—বাবু, খাবার এসেছে। (নিরুত্তর) —খাবার ঠাণ্ডা হয়ে গেল যে।
বৈকুণ্ঠ। (রাগিয়া) যা—আমি খাব না।
ঈশান। আমায় মাপ করো—খাবার জুড়িয়ে গেল।
বৈকুণ্ঠ। না, আমি খাব না।
ঈশান। পায়ে ধরি বাবু—খেতে চলো—রাগ কোরো না।
বৈকুণ্ঠ। যাঃ— বেরো তুই—বিরক্ত করিস নে।
ঈশান। দাও আমার কান মলে দাও—বাবু—
অবিনাশ। কী দাদা। এখনো বসে বসে লিখছ বুঝি?
বৈকুণ্ঠ। না না, কিচ্ছু না—এখন লিখতে যাব কেন? ঈশানের সঙ্গে বসে বসে গল্প করছি।— ঈশেন, তুই যা, আমি যাচ্ছি।
অবিনাশ। দাদা, মাইনের টাকাগুলো এনেছি—এই কুড়ি টাকার পাঁচ কেতা নোট আর পাঁচশো টাকার একখানা।
বৈকুণ্ঠ। ঐ পাঁচশো টাকার খানা তুমিই রাখো-না অবু।
অবিনাশ। কেন দাদা।
বৈকুণ্ঠ। যদি কোনো আবশ্যক হয়—খরচপত্র—
অবিনাশ। আবশ্যক হলে চেয়ে নেব—
বৈকুণ্ঠ। তবে এইখানে রাখো। তোমার হাতে টাকা দিলেও তো থাকে না। যে আসে তাকেই বিশ্বাস করে বস। টাকা রাখতে হলে লোক চিনতে হয় ভাই।
অবিনাশ। (হাসিয়া) সেইজন্যেই তো তোমার হাতে দিয়ে নিশ্চিন্ত হই দাদা।
বৈকুণ্ঠ। অবি, হাসছিস যে! কেন, আমাকে কেউ ঠকিয়েছে বলতে পারিস? সেদিন সেই স্বরসুত্রসার বই কিনলেম, তোরা নিশ্চয় মনে করেছিস ঠকেছি —কিন্তু সংগীত সম্বন্ধে অমন প্রাচীন বই আর আছে? হীরে দিয়ে ওজন করলেও ওর দাম হয় না। তিনশো টাকায় তো অমনি পেয়েছি।