পঞ্চক। ঐ উপাচার্য আসছেন —বোধ করি কাজের কথা আছে—বিদায় হই।
উপাচার্য। (উপাধ্যায়ের প্রতি) আচার্যদেবকে তো বলতেই হবে। উনি নিতান্ত উদ্বিগ্ন হবেন—কিন্তু দায়িত্ব যে ওঁরই।
আচার্য। উপাধ্যায়, কোনো সংবাদ আছে নাকি?
উপাধ্যায়। অত্যন্ত মন্দ সংবাদ।
আচার্য। অতএব সেটা সত্বর বলা উচিত।
উপাচার্য। উপাধ্যায়, কথাটা বলে ফেলো। এদিকে প্রতিকারের সময় উত্তীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের গ্রহাচার্য বলছেন আজ তিন প্রহর সাড়ে তিন দণ্ডের মধ্যে দ্ব্যাত্মকচরাংশলগ্নে যা-কিছু করবার সময়—সেটা অতিক্রম করলেই গোপরিক্রমণ আরম্ভ হবে, তখন প্রায়শ্চিত্তের কেবল এক পাদ হবে বিপ্র, অর্ধ পাদ বৈশ্য, বাকি সমস্তটাই শূদ্র।
উপাধ্যায়। আচার্যদেব, সুভদ্র আমাদের আয়তনের উত্তর দিকের জানলা খুলে বাইরে দৃষ্টিপাত করেছে।
আচার্য। উত্তর দিকটা তো একজটা দেবীর।
উপাধ্যায়। সেই তো ভাবনা। আমাদের আয়তনের মন্ত্রঃপূত রুদ্ধ বাতাসকে সেখানকার হাওয়া কতটা দূর পর্যন্ত আক্রমণ করেছে বলা তো যায় না।
উপাচার্য। এখন কথা হচ্ছে এ পাপের প্রায়শ্চিত্ত কী।
আচার্য। আমার তো স্মরন হয় না। উপাধ্যায় বোধ করি-
উপাধ্যায়। না, আমিও তো মনে আনতে পারি নে। আজ তিনশো বছর এ প্রায়শ্চিত্তটার প্রয়োজন হয় নি— সবাই ভুলেই গেছে। ঐ-যে মহাপঞ্চক আসছে—যদি কারও জানা থাকে তো সে ওর।
মহাপঞ্চক। সেইজন্যেই তো এলুম; আমরা এখন সকলেই অশুচি, বাহিরের হাওয়া আমাদের আয়তনে প্রবেশ করেছে।
উপাচার্য। এর প্রায়শ্চিত্ত কী, আমাদের কারো স্মরণ নেই—তুমিই বলতে পার।
মহাপঞ্চক। ক্রিয়াকল্পতরুতে এর কোনো উল্লেখ পাওয়া যায় না—একমাত্র ভগবান জ্বলনানন্তকৃত আধিকর্মিক বর্ষায়ণে লিখছে অপরাধীকে ছয় মাস মহাতামস সাধন করতে হবে।
উপাচার্য। মহাতামস?
মহাপঞ্চক। হাঁ, আলোকের এক রশ্মিমাত্র সে দেখতে পাবে না। কেননা আলোকের দ্বারা যে অপরাধ অন্ধকারের দ্বারাই তার ক্ষালন।
উপাচার্য। তা হলে, মহাপঞ্চক, সমস্ত ভার তোমার উপর রইল।