প্রথম লেখক। ( দ্বিতীয়ের প্রতি) কুণ্ডুমশায়ের কী অসাধারণ যুক্তিশক্তি ও জ্ঞান। কিন্তু কিছু কি বুঝতে পারলে ভাই?
দ্বিতীয় লেখক। না ভাই, বোঝা গেল না। ভালো করে জিজ্ঞাসা করা যাক-না। আচ্ছা মশায়, আপনি ধারণ কারণ প্রভৃতি যে-সকল শক্তির উল্লেখ করলেন, সেগুলো কী?
চিন্তামণি। সেগুলো আর কিছু নয় — ইংরেজিতে যাকে বলে ফোর্স্, যাকে বলে ম্যাগ্নেটিজ্ম্।
লেখকগণ। ( সমস্বরে ) ওঃ, বুঝেছি।
হরিহর। আজ্ঞে, আমি এখনো কিছু বুঝতে পারছি নে।
লেখকগণ। ( বিরক্ত হইয়া) বুঝতে পারছেন না! ম্যাগ্নেটিজ্ম্ — ফোর্স্ — সোজা কথা। ম্যাগ্নেটিজ্ম্ তো জানেন? ফোর্স্ তো জানেন? এও তাই আর-কি। আর্যদের অসাধারন বিজ্ঞানচর্চা।
প্রথম লেখক। এ-সকল স্পষ্ট বুঝতে গেলে নানা শাস্ত্র জানা আবশ্যক। মশায়ের বোধ করি নানা শাস্ত্র অধ্যায়ন করা হয়েছে?
চিন্তামণি। না, শাস্ত্রটা এখনো পড়া হয় নি। আমি, আমার বাবা এবং ৺নফর কুণ্ডু আর্য — এইজন্য শাস্ত্র অধ্যয়ন আমি বাহুল্য বিবেচনা করেছি।
দ্বিতীয় লেখক। তা বটে, কিন্তু বিজ্ঞানটা আপনি অবিশ্যি ভালো করেই পড়েছেন।
চিন্তামণি। আজ্ঞে না, আমি চিন্তাশক্তির প্রভাবে আমাদের আর্যজাতির হাঁচি কাশি তুড়ি আঙুল-মটকানো প্রভৃতি আচার-ব্যবহারের নানাবিধ সূক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক তত্ত্বসকল আয়ত্ত করেছি। আমার বিজ্ঞান পড়া আবশ্যক হয় নি। আপনারা শুনে হয়তো বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু আর্যশাস্ত্রের দিব্যি নিয়ে আমি শপথ করতে পারি, আমি আর্যশাস্ত্র কিংবা বিজ্ঞান কিছুই পড়ি নি। আমার সমস্ত বিদ্যা স্বাধীনচিন্তাপ্রসূত।
হরিহর। আজ্ঞে, শপথ করবার আবশ্যক নেই — পড়াশুনো আছে, এরূপ অপবাদ আপনাকে কেউ দেবে না।