
অন্তর-নরকানলে। সে পাপের ভার
ভস্ম হয়ে ক্ষয় হয়ে গেছে। যে ব্রাহ্মণ
বিনা চিত্তপরিতাপে পরপুত্রধন
স্নেহবন্ধ হতে ছিঁড়ি করেছে বিনাশ
শাস্ত্রজ্ঞান-অভিমানে, তারি হেথা বাস
সমুচিত।
ঋত্বিক্। যেয়ো না যেয়ো না তুমি চলে
মহারাজ! সর্পশীর্ষ তীব্র ঈর্ষানলে
আমারে ফেলিয়া রাখি যেয়ো না, যেয়ো না
একাকী অমরলোকে। নূতন বেদনা
বাড়ায়ো না বেদনায় তীব্র দুর্বিষহ
সৃজিয়ো না দ্বিতীয় নরক। রহ রহ
মহারাজ, রহ হেথা।
সোমক। রব তব সহ
হে দুর্ভাগা! তুমি আমি মিলি অহরহ
করিব দারুণ হোম, সুদীর্ঘ যজন
বিরাট নরকহুতাশনে। ভগবন্,
যতকাল ঋত্বিকের আছে পাপভোগ
ততকাল তার সাথে করো মোরে যোগ —
নরকের সহবাসে দাও অনুমতি।
ধর্ম। মহান্ গৌরবে হেথা রহো মহীপতি!
ভালের তিলক হোক দুঃসহদহন,
নরকাগ্নি হোক তব স্বর্ণসিংহাসন।
প্রেতগণ। জয় জয়, মহারাজ, পুণ্যফলত্যাগী।
নিষ্পাপ নরকবাসী, হে মহাবৈরাগী,
পাপীর অন্তরে করো গৌরবসঞ্চার
তব সহবাসে। করো নরক উদ্ধার।
বোসো আসি দীর্ঘ যুগ মহাশত্রুসনে
প্রিয়তম মিত্র-সম এক দুঃখাসনে।
অতি উচ্চ বেদনার আগ্নেয় চূড়ায়
জ্বলন্ত মেঘের সাথে দীপ্ত সূর্যপ্রায়।
দেখা যাবে তোমাদের যুগল মুরতি —
নিত্যকাল-উদ্ভাসিত অনির্বাণ জ্যোতি।
৭ই অগ্রহায়ণ ১৩০৪