বিপাশা। গান
মন যে বলে, চিনি চিনি
যে গন্ধ বয় এই সমীরে।
কে ওরে কয় বিদেশিনী
চৈত্ররাতের চামেলিরে?
রক্তে রেখে গেছে ভাষা
স্বপ্নে ছিল যাওয়া-আসা
কোন্ যুগে কোন্ হাওয়ার পথে
কোন্ বনে কোন্ সিন্ধুতীরে।
এই সুদূরে পরবাসে
ওর বাঁশি আজ প্রাণে আসে।
মোর পুরাতন দিনের পাখি
ডাক শুনে তার উঠল ডাকি,
চিত্ততলে জাগিয়ে তোলে
অশ্রুজলের ভৈরবীরে॥
নরেশ। বিপাশা, একটা কথা শুনতে চাই।
বিপাশা। ঐ তো তোমার লুব্ধ স্বভাব। বললে, একটি গান শুনতে চাই, যেমনি গান শেষ হল রব উঠেছে একটি কথা শুনতে চাই। একটি কথা থেকে দুটি কথা হবে, তার পর আমার কাজের বেলা যাবে চলে। আমি যাই।
নরেশ। শোনো, শোনো, একটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাও। ঐ-যে গাইলে ওটা কি সত্য। প্রবাসে বাঁশি কি বেজেছে।
বিপাশা। অরসিক, কথা দিয়ে যার কাছে গান ব্যাখ্যা করতে হয় তাকে গান না শোনানোই ভালো। তুমি-যে অলঙ্কার-শাস্ত্রের ছাত্রদেরও ছাড়িয়ে উঠলে।
নরেশ। তবে থাক্ ব্যাখ্যা, গানই আমার যথেষ্ট।
গৌরী। একা-একা কার সঙ্গে আলাপ চলছে? বনদেবতার সঙ্গে?
কালিন্দী। না গো, মনোদেবতার সঙ্গে। মন্মথর স্তব কণ্ঠস্থ করছি। রাজার আদেশ।
গৌরী। ওটা হৃদয়স্থ থাকলেই হয়, কণ্ঠে আনবার দরকার কী।
কালিন্দী। হৃদয়ের পদচারণার পথ কণ্ঠে।
গৌরী। ওগো জালন্ধরিণী, এতদিন আছি, তোমাদের ধরনধারণ আজও বুঝতে পারলুম না।
কালিন্দী। আশ্চর্য নেই গো কাশ্মীরিণী, বুঝতে বুদ্ধির দরকার করে। কোন্খানটা দুর্বোধ ঠেকছে, শুনি-না।