Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (http://rabindra-rachanabali.nltr.org)
পরিত্রাণ- চতুর্থ অঙ্ক- দ্বিতীয় দৃশ্য, ৫১
পরিত্রাণ
ধনঞ্জয়। কেন দিদি।
বিভা। আমাকে তোমাদের সঙ্গ দিয়ো ঠাকুর।
উদয়। ঠাকুর, শেষকালে বিভাকেও আমাদের পথ নিতে হল!
ধনঞ্জয়। সে তো বেশ কথা। দয়াময় হরি! কী আনন্দ, তোমার এ কী আনন্দ! ছাড় না, কিছুতেই ছাড় না। শ্বশুরবাড়ির রাস্তার ধারেও ডাকাতের মত বসে আছে। দিদি, এই মাঝরাস্তায় আমাদের পাগল প্রভুর তলব পড়েছে। একেবারে জোর তলব। চল্ চল্। চল্ চল্। পা ফেলে চল্। খুশি হয়ে চল্। হাসতে হাসতে চল্। রাস্তা এমন করে পরিষ্কার করে দিয়েছে — আর ভয় কিসের।
গীত
আমি ফিরব না রে, ফিরব না আর ফিরব না রে —
এখন হাওয়ার মুখে ভাসল তরী,
কূলে ভিড়ব না আর ভিড়ব না রে।
ছড়িয়ে গেছে সুতো ছিঁড়ে,
তাই খুঁটে আজ মরব কি রে।
এখন ভাঙা ঘরের কুড়িয়ে খুঁটি
বেড়া ঘিরব না আর ঘিরব না রে।
ঘাটের রশি গেছে কেটে,
কাঁদব কি তাই বক্ষ ফেটে?
এখন পালের রশি ধরব কষি,
এ রশি ছিঁড়ব না আর ছিঁড়ব না রে।