কোন্ বিপদে কাড়বে।
প্রাণের সঙ্গে যে প্রাণ গাঁথা
কোন্ কালে সে ছাড়বে।
নাহয় গেল সবই ভেসে —
রইবে তো সেই সর্বনেশে,
যে লাভ সকল ক্ষতির শেষে
সে লাভ কেবল বাড়বে।
সুখ নিয়ে ভাই, ভয়ে থাকি —
আছে আছে দেয় সে ফাঁকি,
দুঃখে যে সুখ থাকে বাকি
কেই বা সে সুখ নাড়বে।
যে পড়েছে পড়ার শেষে
ঠাঁই পেয়েছে তলায় এসে —
ভয় মিটেছে, বেঁচেছে সে,
তারে কে আর পাড়বে।
উদয়। বৈরাগী ঠাকুর, আমি তোমার সঙ্গ ধরলুম, আর ছাড়ছি নে কিন্তু।
ধনঞ্জয়। তুমি ছাড়লে আমি ছাড়ি কই ভাই। মনে বেশ আনন্দ আছে তো? খুঁতমুত কিছু নেই তো?
উদয়। কিছু না, বেশ আছি।
ধনঞ্জয়। তবে দাও একটু পায়ের ধুলো।
উদয়। ও কী কর, ও কী কর। অপরাধ হবে যে।
ধনঞ্জয়। দাদা, এতবড়ো বোঝা নিজের হাতে ভগবান যার কাঁধ থেকে নামিয়ে দেন, সে যে মহাপুরুষ। তোমাকে দেখে আমার সর্ব গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। একবার দিদিকে আনো, তাকে একবার দেখি।
উদয়। সে তোমাকে দেখবার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে, তাকে ডেকে আনছি।
বিভার প্রবেশ ও বৈরাগীকে প্রণাম
ধনঞ্জয়। ভয় নেই দিদি, ভয় নেই, কোনো ভয় নেই। এই দেখ্-না, আমাকে দেখ্-না — আমি তাঁর রাস্তার ছেলে — রাস্তার কোলে-কোলেই দিন কেটে গেল — দিনরাত্রি একেবারে ধুলোয় ধুলোময় হয়ে বেড়াই, মায়ের আদরে লাল হয়ে উঠি। আমার মায়ের ওই ধুলোঘরে আজ তোমার নতুন নিমন্ত্রণ, কিন্তু মনে কোনো ভয় রেখো না।
বিভা। বৈরাগী ঠাকুর, তুমি কোথায় যাচ্ছ। তুমি কি আমাদের সঙ্গে যাবে।
ধনঞ্জয়। কোথায় যাব সে কথা আমার মনেই থাকে না। ওই রাস্তাই তো আমাকে মজিয়েছে। এই মাটি দেখলে আমাকে মাটি করে দেয়।