প্রথম সখী। ওলো, তুই আপনি সাজিস। দেখিস যদি যুবরাজের মন ভোলাতে পারিস।
তৃতীয় সখী। তুই তো ভাই চেষ্টা করতে ছাড়িস নি। তা, তুই যখন পারলি নে তখন কি আর আমি পারব? ওলো, আমাদের সখীকে যে একবার দেখেছে তার মন কি আর অমনি পথে-ঘাটে চুরি যায়? ঐ বাঁশি এসেছে। ঐ শোন্ বেজে উঠেছে।
প্রথম সখীর গান
ওই বুঝি বাঁশি বাজে।
বনমাঝে কি মনোমাঝে?
বসন্তবায় বহিছে কোথায়, কোথায় ফুটেছে ফুল!
বল গো সজনী, এ সুখরজনী কোন্খানে উদিয়াছে—
বনমাঝে কি মনোমাঝে?
যাব কি যাব না মিছে এ ভাবনা, মিছে মরি লোকলাজে।
কে জানে কোথা সে বিরহহুতাশে ফিরে অভিসারসাজে—
বনমাঝে কি মনোমাঝে?
দ্বিতীয় সখী। ওলো থাম্ — ঐ দেখ্ যুবরাজ কুমারসেন এসেছেন।
তৃতীয় সখী। চল্ চল্ ভাই, আমরা একটু আড়ালে দাঁড়াই গে। তোরা পারিস, কিন্তু কে জানে ভাই, যুবরাজের সামনে যেতে আমার কেমন করে।
দ্বিতীয় সখী। কিন্তু কুমার আজ হঠাৎ অসময়ে এলেন কেন।
প্রথম সখী। ওলো এর কি আর সময়-অসময় আছে? রাজার ছেলে বলে কি পঞ্চশর ওকে ছেড়ে কথা কয়। থাকতে পারবে কেন।
তৃতীয় সখী। চল্ ভাই আড়ালে চল্।
[ অন্তরালে গমন
ইলা। থাক্ নাথ, আর বেশি বলো না আমারে।
কাজ আছে, যেতে হবে রাজ্য ছেড়ে, তাই
বিবাহ স্থগিত রবে কিছুকাল, এর
বেশি কী আর শুনিব?
কুমারসেন। এমনি বিশ্বাস
মোর 'পরে রেখো চিরদিন। মন দিয়ে
মন বোঝা যায়, গভীর বিশ্বাস শুধু
নীরব প্রাণের কথা টেনে নিয়ে আসে।