কখন তোমারে পাব, কখন পাব না,
তাই সদা মনে হয় — কখন হারাব।
একা বসে বসে ভাবি, কোথা আছ তুমি,
কী করিছ। কল্পনা কাঁদিয়া ফিরে আসে
অরণ্যের প্রান্ত হতে। বনের বাহিরে
তোমারে জানি নে আর, পাই নে সন্ধান।
সমস্ত ভুবনে তব রহিব সর্বদা—
কিছুই রবে না আর অচেনা, অজানা,
অন্ধকার। ধরা দিতে চাহ না কি নাথ?
কুমারসেন। ধরা তো দিয়েছি আমি আপন ইচ্ছায়,
তবু কেন বন্ধনের পাশ। বলো দেখি।
কী তুমি পাও নি, কোথা রয়েছে অভাব।
ইলা। যখন তোমার কাছে সুমিত্রার কথা
শুনি ব'সে, মনে মনে ব্যথা যেন বাজে।
মনে হয় সে যেন আমায় ফাঁকি দিয়ে
চুরি করে রাখিয়াছে শৈশব তোমার
গোপনে আপন কাছে। কভু মনে হয়
যদি সে ফিরিয়া আসে, বাল্যসহচরী
ডেকে নিয়ে যায় সেই সুখশৈশবের
খেলাঘরে, সেথা তারি তুমি। সেথা মোর
নাই অধিকার। মাঝে মাঝে সাধ যায়,
তোমার সে সুমিত্রারে দেখি একবার।
কুমারসেন। সে যদি আসিত, আহা, কত সুখ হত!
উৎসবের আনন্দকিরণখানি হয়ে
দীপ্তি পেত পিতৃগৃহে শৈশবভবনে।
অলংকারে সাজাত তোমারে, বাহুপাশে
বাঁধিত সাদরে, চুরি করে হাসিমুখে
দেখিত মিলন। আর কি সে মনে করে
আমাদের? পরগৃহে পর হয়ে আছে।
এরা পরকে আপন করে, আপনারে পর —