সকরুণ দুটি মিথ্যে কথা। হে ব্রাহ্মণ,
বৃদ্ধ তুমি ক্ষীণদৃষ্টি কী করে জানিলে
চোখে তার অশ্রু ছিল কি না? বেশি নয়,
একবিন্দু জল! নহে তো নয়নপ্রান্তে
ছলছল ভাব, কম্পিত কাতর কণ্ঠে
অশ্রুবদ্ধ বাণী! তাও নয়? সত্য বলো,
মিথ্যা বলো। বলো না, বলো না, চলে যাও।
ত্রিবেদী। হরি হে তুমিই সত্য!
বিক্রমদেব। অন্তর্যামী দেব,
তুমি জান, জীবনের সব অপরাধ
তারে ভালোবাসা। পুণ্য গেল, স্বর্গ গেল,
রাজ্য যায়, অবশেষে সেও চলে গেল!
তবে দাও, ফিরে দাও ক্ষাত্রধর্ম মোর —
রাজধর্ম ফিরে দাও, পুরুষহৃদয়
মুক্ত করে দাও এই বিশ্বরঙ্গমাঝে।
কোথা কর্মক্ষেত্র! কোথা জনস্রোত! কোথা
জীবনমরণ! কোথা সেই মানবের
অবিশ্রাম সুখদুঃখ-বিপদ-সম্পদ-
তরঙ্গ উচ্ছ্বাস!
মন্ত্রী। মহারাজ, অশ্বারোহী
পাঠায়েছি চারি দিকে রাজ্ঞীর সন্ধানে।
বিক্রমদেব। ফিরাও ফিরাও মন্ত্রী! স্বপ্ন ছুটে গেছে,
অশ্বারোহী কোথা তারে পাইবে খুঁজিয়া?
সৈন্যদল করহ প্রস্তুত। যুদ্ধে যাব,
নাশিব বিদ্রোহ।
মন্ত্রী। যে আদেশ মহারাজ!
বিক্রমদেব। দেবদত্ত, কেন নত মুখ, ম্লান দৃষ্টি?