প্রতাপাদিত্য। সে বোধ হয় পালিয়েছে। সে যদি থাকে তো আমার কাছে পাঠিয়ে দিয়ো।
মন্ত্রী। কেন মহারাজ, তাঁকে আবার কিসের প্রয়োজন?
প্রতাপাদিত্য। আর কিছু নয়— সেই ভাঁড়টাকে নিয়ে একটু আমোদ করতে পারতুম— তার কথা শুনতে মজা আছে।
ধনঞ্জয়ের প্রবেশ
ধনঞ্জয়। জয় হোক মহারাজ। আপনি তো আমাকে ছাড়তেই চান না কিন্তু কোথা থেকে আগুন ছুটির পরোয়ানা নিয়ে হাজির। কিন্তু না বলে যাই কী করে! তাই হুকুম নিতে এলুম।
প্রতাপাদিত্য। ক-দিন কাটল কেমন?
ধনঞ্জয়। সুখে কেটেছে— কোনো ভাবনা ছিল না। এ-সব তারই লুকোচুরি খেলা— ভেবেছিল গারদে লুকোবে, ধরতে পারব না— কিন্তু ধরেছি, চেপে ধরেছি, তার পরে খুব হাসি, খুব গান। বড়ো আনন্দ গেছে-আমার গারদ-ভাইকে মনে থাকবে।
গান
ওরে শিকল, তোমায় কোলে করে
দিয়েছি ঝংকার।
তুমি আনন্দে ভাই রেখেছিলে
ভেঙে অহংকার।
তোমায় নিয়ে ক'রে খেলা
সুখে দুঃখে কাটল বেলা,
অঙ্গ বেড়ি দিলে বেড়ি
বিনা দামের অলংকার।
তোমার'পরে করি নে রোষ,
দোষ থাকে তো আমারি দোষ,
ভয় যদি রয় আপন মনে
তোমায় দেখি ভয়ংকর।
অন্ধকারে সারা রাতি
ছিলে আমার সাথের সাথি,
সেই দয়াটি স্মরি তোমায়
করি নমস্কার।
প্রতাপাদিত্য। বল কি বৈরাগী, গারদে তোমার এত আনন্দ কিসের?
ধনঞ্জয়। মহারাজ, রাজ্যে তোমার যেমন আনন্দ তেমনি আনন্দ, অভাব কিসের? তোমাকে সুখ দিতে পারেন আর আমাকে পারেন না?
প্রতাপাদিত্য। এখন তুমি যাবে কোথায়?