ঘুচল না তোর কথা-কওয়া রোগ?
কল্যাণী। রানী, যদি কিছু না কর মনে,
কথা আছে কিছু — কব গোপনে।
ক্ষীরো। আর কোথা যাব, গোপন এই তো —
তুমি আমি ছাড়া কেহই নেই তো।
এরা সব দাসী, কাজ নেই কিছু —
রানীর সঙ্গে ফেরে পিছু-পিছু।
হেথা হতে যদি করে দিই দূর
হবে না তো সেটা ঠিক দস্তুর ;
কী বল মালতী!
মালতী। আজ্ঞে, তাই তো,
দস্তুরমত চলাই চাই তো।
ক্ষীরো। সোনার বাটাটা কোথায় কে জানে।
খুঁজে দেখ্ দেখি।
দাসী। এই-যে এখানে।
ক্ষীরো। ওটা নয়, সেই মুক্তো-বসানো
আরেকটা আছে সেইটেই আনো।
অন্য বাটা-অনয়ন
খয়েরের দাগ লেগেছে ডালায়,
বাঁচি নে তো আর তোদের জ্বালায়।
তবে নিয়ে আয় চুনীর সে বাটা —
না না, নিয়ে আয় পান্না-দেওয়াটা।
কল্যাণী। কথাটা আমার নিই তবে বলে।
পাঠান বাদশা অন্যায় ছলে
রাজ্য আমার নিয়েছেন কেড়ে —
ক্ষীরো। বল কী! তা হলে গেছে ফুলবেড়ে,
গিরিধরপুর, গোপালনগর
কানাইগঞ্জ —
কল্যাণী। সব গেছে মোর।
ক্ষীরো। হাতে আছে কিছু নগদ টাকা কি।
কল্যাণী। সব নিয়ে গেছে, কিছু নেই বাকি।
ক্ষীরো। অদৃষ্টে ছিল এত দুখ তোর!