Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (http://rabindra-rachanabali.nltr.org)


শেষরক্ষা - দ্বিতীয় অঙ্ক - প্রথম দৃশ্য, ১৯
শেষরক্ষা
তুমি তো তা পারবে না। আপাতত ছবিটা তোর কাছে রাখ্‌।

কমল। ছবিতে আমার দরকার নেই।

ইন্দু। নেই দরকার? তবে ওটা আমার রইল? সর্বস্বত্ব ত্যাগ করলে?

কমল। কেন বল্‌ দেখি। এত উৎসাহ কেন তোর?

ইন্দু। সেদিন নাম খুঁজছিলুম, রূপও তো খুঁজতে হবে। এই ছবির মধ্যে যদি নামে রূপে মিল হয়ে যায়?

কমল। অর্থাৎ?

ইন্দু। অর্থাৎ (গদাইয়ের ছবি দেখাইয়া) এর নাম যদি গদাই না হয়, যদি কুমুদ কিংবা পরিমল, কিংবা কিশলয় কিংবা কোকনদ, কিংবা কপিঞ্জল হয়ে দাঁড়ায়?

কমল। তা হলেই চুকে যাবে?

ইন্দু। একেবারে চুকে না যাক, মিউজিয়মে একটা প্রথম স্পেসিমেন্‌ পাওয়া যাবে তো?

কমল। আচ্ছা,তোর স্পেসিমেন্‌ জমা কর্‌—আপাতত তোর চুল বেঁধে দিই গে চল্‌।


দ্বিতীয় অঙ্ক
প্রথম দৃশ্য
চন্দ্রের অন্তঃপুর
ক্ষান্তমণি ও ইন্দুমতী

ইন্দু। তোমার স্বামী আদর করেই ঠাট্টা করে, সে কি আর সত্যি!

ক্ষান্তমণি। না ভাই, ঠাট্টা কি সত্যি ঠিক বুঝতে পারি নে। আর সত্যি হবারই বা আটক কী? নিজে তো জানি নিজের গুণ কত।

ইন্দু। তোমার স্বামীর আবার তেমনি সব বন্ধু জুটেছে, তাঁরাই পাঁচ জনে পাঁচ কথা বলে তাঁর মন উতলা করে দেয়। বিশেষ সেদিন বিনোদবাবু আর তোমার স্বামীর সঙ্গে আর-একটি বাবু আমাদের বাড়িতে গিয়েছিল, তাকে দেখে আমার আদবে ভালো লাগল না, লোকটি কে ভাই?

ক্ষান্তমণি। কী জানি ভাই! বন্ধু একটি-আধটি তো নয়, সবগুলোকে আবার চিনিও নে।

ইন্দু। এই দেখ্‌-না তার ছবি। ( কাপড় খুঁজিয়া) এ কী হল! এই যাঃ, কোথায় ফেললুম!

ক্ষান্তমণি। কী ফেললি?