রায় কৃষ্ণকিশোর বাহাদুর মৃত্যুশয্যায় শয়ান
চন্দ্রকিশোর নন্দকিশোর ও ইন্দ্রকিশোর পুত্রত্রয় পরামর্শে রত
ডাক্তার উপস্থিত। মহিলাগণ ক্রন্দনোন্মুখী
চন্দ্র। কাকে কাকে লিখি?
ইন্দ্র। রেনল্ড্স্-সায়েবকে লেখো।
কৃষ্ণ। ( অতিকষ্টে ) কী লিখবে বাবা!
নন্দ। তোমার মৃত্যুসংবাদ।
কৃষ্ণ। এখনো তো মরি নি বাবা!
ইন্দ্র। এখনি নেই বা মলে, কিন্তু একটা সময় স্থির করে লিখতে হবে তো।
চন্দ্র। যত শীঘ্র পারি সাহেবদের কন্ডোলেন্স্ লেটারগুলো আদায় করে কাগজে ছাপিয়ে ফেলা দরকার, এর পরে জুড়িয়ে গেলে ছাপিয়ে তেমন ফল হবে না।
কৃষ্ণ। রোসো বাবা, আগে আমি জুড়িয়ে যাই।
নন্দ। সবুর করলে চলবে না বাবা! সিমলে দার্জিলিঙে যাদের যাদের চিঠি পাঠাতে হবে তাদের একটা ফর্দ করা যাক। ব'লে যাও।
চন্দ্র। লাট-সায়েব, ইলবর্ট্-সায়েব, উইলসন্-সায়েব, বেরেস্ফোর্ড, মেকলে, পিকক-
কৃষ্ণ। বাবা, কানের কাছে ও কী নামগুলো করছ, তার চেয়ে ভগবানের নাম করো। অন্তিমে তিনিই সহায়। হরি হে —
ইন্দ্র। ভালো মনে করিয়ে দিয়েছ, হ্যারিসন-সায়েবকে ধরা হয় নি।
কৃষ্ণ। বাবা, বলো রাম রাম-
নন্দ। তাই তো, রামজে-সায়েবকে তো ভুলেছিলুম।
কৃষ্ণ। নারায়ণ নারায়ণ!
চন্দ্র। নন্দ, লেখো তো, নোরান-সায়েবের নামটা লেখো তো।
স্কন্দকিশোরের প্রবেশ
স্কন্দ। বা, তোমরা বেশ তো! আসল কাজটাই তো বাকি।
চন্দ্র। কী বলো তো।
স্কন্দ। ঘাটে যাবার প্রোসেশ্যনে যারা যোগ দেবে তাদের তো আগে থাকতে খবর দেওয়া চাই।
কৃষ্ণ। বাবা, কোন্টা আসল হল। আগে তো মরতে হবে, তার পরে —
চন্দ্র। সেজন্য ভাবনা নেই। ডাক্তার!