পদ্মপত্র যত ভয়ে ধরে রাখে শিরে
সেইমত রেখেছিনু তারে। সুকঠোর
ক্ষাত্রধর্ম রাজধর্ম স্নেহপানে মোর
চাহিত সরোষ চক্ষে ; দেবী বসুন্ধরা
অবহেলা-অবমানে হইত কাতরা,
রাজলক্ষ্মী হত লজ্জামুখী।
সভামাঝে
একদা অমাত্য-সাথে ছিনু রাজকাজে,
হেনকালে অন্তঃপুরে শিশুর ক্রন্দন
পশিল আমার কর্ণে। ত্যজি সিংহাসন
দ্রুত ছুটে চলে গেনু ফেলি সর্বকাজ।
ঋত্বিক্। সে মুহূর্তে প্রবেশিনু রাজসভামাঝ
আশিস করিতে নৃপে ধান্যদূর্বাকরে
আমি রাজপুরোহিত। ব্যগ্রতার ভরে
আমারে ঠেলিয়া রাজা গেলেন চলিয়া,
অর্ঘ্য পড়ি গেল ভূমে। উঠিল জ্বলিয়া
ব্রাহ্মণের অভিমান। ক্ষণকাল-পরে
ফিরিয়া আসিলা রাজা লজ্জিত-অন্তরে।
আমি শুধালেম তাঁরে, ‘ কহ হে রাজন্,
কী মহা অনর্থপাত দুর্দৈবঘটন
ঘটেছিল, যার লাগি ব্রাহ্মণেরে ঠেলি
অন্ধ অবজ্ঞার বশে, রাজকর্ম ফেলি,
না শুনি বিচারপ্রার্থী প্রজাদের যত
আবেদন, পররাষ্ট্র হতে সমাগত
রাজদূতগণে নাহি করি সম্ভাষণ,
সামন্ত রাজন্যগণে না দিয়া আসন,
প্রধান অমাত্য-সবে রাজ্যের বারতা
না করি জিজ্ঞাসাবাদ, না করি শিষ্টতা
অতিথি-সজ্জন-গুণীজনে — অসময়ে
ছুটি গেলা অন্তঃপুরে মত্তপ্রায় হয়ে
শিশুর ক্রন্দন শুনি? ধিক্ মহারাজ,
লজ্জায় আনতশির ক্ষত্রিয়সমাজ