মন্মথ। মিথ্যে আমাকে বলছ। হয়তো সব দোষ আমারই, একলা আমারই! তার শাস্তিও যথেষ্ট পেয়েছি। এখন তোমরাই যদি সংশোধনের ভার নাও তো নাও, আমি নিষ্কৃতি নিলুম।
সতীশ। (উচ্চস্বরে) মা, মা!
বিধুমুখী। কী সতীশ, কী হয়েছে।
সতীশ। ঠিক করেছি, যেমন করে হোক নেক্লেসটা নেলির কাছ থেকে ফিরিয়ে আনবই।
বিধুমুখী। কী ছুতো করবি।
সতীশ। কোনো ছুতোই না। সত্যি কথা বলব। নেলির কাছে আমি কিছু লুকোব না।
বিধুমুখী। না না, সে কি হয়।
সতীশ। বলব গুড়গুড়ির কথা — বলব আমার অবস্থা কত খারাপ। আমি নেলিকে ফাঁকি দিতে পারব না।
বিধুমুখী। সতীশ, আমার কথা শোন্, বিয়েটা আগে হোক, তার পরে সত্যি মিথ্যে যা ইচ্ছে তোর তাই বলিস।
সতীশ। সে আমি কিছুতে পারব না। আমি জানি, নেলি একটুও মিথ্যে সইতে পারে না। আমি কিচ্ছু লুকোব না। আগাগোড়া সব বলব।
বিধুমুখী। তার পরে?
সতীশ। (ললাট আঘাত করিয়া) তার পরে কপাল!
নলিনী। ও কী সতীশ, পালাও কোথায়।
সতীশ। তোমাদের এখানে টেনিস্পার্টি জানতেম না, আমি টেনিস্সুট পরে আসি নি।
নলিনী। জন্বুলের যত বাছুর আছে সকলেরই তো এক রঙের চামড়া হয় না, তোমার নাহয় ওরিজিন্যাল বলেই নাম রটবে। আচ্ছা, আমি তোমার সুবিধা করে দিচ্ছি। — মিস্টার নন্দী, আপনার কাছে আমার একটা অনুরোধ আছে।
নন্দী। অনুরোধ কেন, হুকুম বলুন-না — আমি আপনারই সেবার্থে।
নলিনী। যদি একেবারে অসাধ্য বোধ না করেন তা আজকের মতো আপনারা সতীশকে মাপ করবেন — ইনি আজ টেনিস্সুট ’পরে আসেন নি। এতবড়ো শোচনীয় দুর্ঘটনা!
নন্দী। আপনি ওকালতি করলে খুন, জাল, ঘর-জ্বালানোও মাপ করতে পারি। টেনিস্সুট না পরে এলেই যদি আপনার এত দয়া হয়, তবে আমার এই টেনিস্সুটটা মিস্টার সতীশকে দান করে তাঁর এই — এটাকে কী বলি! তোমার এটা কী সুট, সতীশ। খিচুড়ি-সুটই বলা যাক্ — তা আমি সতীশের এই খিচুড়ি-সুটটা পরে রোজ এখানে আসব। আমার দিকে যদি স্বর্গের সমস্ত সূর্য চন্দ্র তারা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে,তবু লজ্জা করব না।