জয়সিংহ। একি শুনিলাম! দয়াময়ী মাতঃ, একি
কথা! তোর আজ্ঞা! ভাই দিয়ে ভ্রাতৃহত্যা!
বিশ্বের জননী! — গুরুদেব! হেন আজ্ঞা
মাতৃ-আজ্ঞা ব'লে করিলে প্রচার!..
রঘুপতি। বন্ধ হোক বলিদান
তবে
জয়সিংহ। হোক বন্ধ। — না না গুরুদেব, তুমি
জানো ভালোমন্দ। সরল ভক্তের বিধি
শাস্ত্রবিধি নহে। আপন আলোকে আঁখি
দেখিতে না পায়, আলোক আকাশ হতে
আসে। প্রভু, ক্ষমা করো, ক্ষমা করো দাসে ;
ক্ষমা করো স্পর্ধা মূঢ়তার। ক্ষমা করো
নিতান্ত বেদনাবেশে উদ্ভ্রান্ত প্রলাপ।
বলো প্রভু, সত্যই কি রাজরক্ত চান
মহাদেবী?
রঘুপতি। হায় বৎ স, হায়! অবশেষে
অবিশ্বাস মোর প্রতি?
জয়সিংহ। অবিশ্বাস! কভু
নহে। তোমারে ছাড়িলে, বিশ্বাস আমার
দাঁড়াবে কোথায়? বাসুকির শিরশ্চ্যুত
বসুধার মতো, শূন্য হতে শূন্যে পাবে
লোপ। রাজরক্ত চায় তবে মহামায়া,
সে রক্ত আনিব আমি। দিব না ঘটিতে
ভ্রাতৃহত্যা।
রঘুপতি। দেবতার আজ্ঞা পাপ নহে।
জয়সিংহ। পুণ্য তবে, আমিই সে করিব অর্জন।
রঘুপতি। সত্য করে বলি, বৎ স, তবে। তোরে আমি
ভালোবাসি প্রাণের অধিক — পালিয়াছি
শিশুকাল হতে তোরে, মায়ের অধিক
স্নেহে — তোরে আমি নারিব হারাতে।
জয়সিংহ। মোর
স্নেহে ঘটিতে দিব না পাপ, অভিশাপ