বিপিন। মাথায় টাক আছে?
ভৃত্য। আছে।
বিপিন। ( তানপুরা রাখিয়া ) নিয়ে আয়, এখনই নিয়ে আয়। ওরে ওরে, তামাক দিয়ে যা। বেহারাটা কোথায় গেল, পাখা টানতে বলে দে। আর দেখ্, চট করে গোটাকতক মিঠে পানের দোনা কিনে আন্ তো রে। দেরি করিস নে, আর আধ সের বরফ নিয়ে আসিস — বুঝেছিস?
[ ভৃত্যের প্রস্থান
( পদশব্দ শুনিয়া ) রসিকবাবু, আসুন।
বনমালীর প্রবেশ
বিপিন। রসিকবাবু — এ যে সেই বনমালী!
বৃদ্ধ। আজ্ঞে হাঁ, আমার নাম শ্রীবনমালী ভট্টাচার্য।
বিপিন। সে পরিচয় অনাবশ্যক। আমি একটু বিশেষ কাজে আছি।
বনমালী। মেয়েদুটিকে আর রাখা যায় না — পাত্রও অনেক আসছে —
বিপিন। শুনে খুশি হলেম — দিয়ে ফেলুন, দিয়ে ফেলুন —
বনমালী। কিন্তু আপনাদেরই ঠিক উপযুক্ত হত —
বিপিন। দেখুন বনমালীবাবু, এখনো আপনি আমার সম্পূর্ণ পরিচয় পান নি — যদি একবার পান তা হলে আমার উপযুক্ততা সম্বন্ধে আপনার ভয়ানক সন্দেহ হবে।
বনমালী। তা হলে আমি উঠি, আপনি ব্যস্ত আছেন, আর - এক সময় আসব।
বিপিন। ( তানপুরা তুলিয়া লইয়া ) সারেগা রেগামা গামাপা —
শ্রীশের প্রবেশ
শ্রীশ। কী হে বিপিন, একি। কুস্তি ছেড়ে দিয়ে গান ধরেছ? গুরুদাস যে?
বিপিন। ওস্তাদজি, আজ ছুটি। কী করব বলো, গান না শিখলে তো আর তোমার সন্ন্যাসীদলে আমল পাওয়া যাবে না। গুরুদাসকে গুরু মেনেছি। ওর কাছে নবীন - সন্ন্যাস - ব্রতের দীক্ষা নিচ্ছি।
শ্রীশ। সে কিরকম।
বিপিন। রস ভরে উঠলে তবেই তো ত্যাগ সহজ হয়। মেঘ যখন জলে ভারী হয় তখনই জল বর্ষণ করে।
শ্রীশ। রাখো তোমার নতুন ফিলসফি, কুমার - সভার সেই লেখাটায় হাত দিতে পেরেছ?
বিপিন। না ভাই, সেটাতে এখনো হাত দিতে পারি নি। তোমার লেখাটি হয়ে গেছে নাকি।
শ্রীশ। না, আমিও হাত দিই নি। ( কিয়ৎক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া ) না ভাই, ভারি অন্যায় হচ্ছে। ক্রমেই আমরা আমাদের সংকল্প থেকে যেন দূরে চলে যাচ্ছি।
বিপিন। অনেক সংকল্প ব্যাঙাচির লেজের মতো, পরিণতির সঙ্গে সঙ্গে আপনি অন্তর্ধান করে। কিন্তু যদি লেজটুকুই থেকে