রমণীগণের গান
এবার সখী, সোনার মৃগ
দেয় বুঝি দেয় ধরা।
আয় গো তোরা পুরাঙ্গনা,
আয় সবে আয় ত্বরা।
ছুটেছিল পিয়াস-ভরে
মরীচিকা-বারির তরে,
ধ'রে তারে কোমল করে
কঠিন ফাঁসি পরা।
দয়ামায়া করিস নে গো,
ওদের নয় সে ধারা।
দয়ার দোহাই মানবে না গো
একটু পেলেই ছাড়া।
বাঁধন-কাটা বন্যটাকে
মায়ার ফাঁদে ফেলাও পাকে,
ভুলাও তাকে বাঁশির ডাকে
বুদ্ধি-বিচার-হরা॥
অন্নদা। বুদ্ধি-বিচার একেবারেই যায় নি। অতি সামান্যই বাকি আছে। তার থেকে মনে হচ্ছে, ঐ-যে যাকে জন্তু-জানোয়ার বলা হল সে সৌভাগ্যশালী আমি ছাড়া, উপস্থিত ক্ষেত্রে, আর কেউ হতেই পারে না। গানটি ভালো, সুরটিও বেশ, কন্ঠস্বরেরও নিন্দা করা যায় না, কিন্তু রূপক ভেঙে সাদা ভাষায় একটু স্পষ্ট করে সবটা খুলে বলুন দেখি— আমার সম্বন্ধে আপনারা কী করতে চান? পালাব এমন আশঙ্কা করবেন না, আপনারা তাড়া দিলেও নয়। কিন্তু কোথায় এলুম, কেন এলুম, কোথায় যাব, এ-সকল গুরুতর প্রশ্ন মানবমনে স্বভাবতই উদয় হয়ে থাকে।
মাতাজি। তোমার স্ত্রীকে কি মাঝে মাঝে স্মরণ কর?
অন্নদা। করে লাভ কী, কেবল সময় নষ্ট। তাঁকে স্মরণ করে যেটুকু সুখ আপনাদের দর্শন করে তার চেয়ে ঢের বেশি আনন্দ।
মাতাজি। তোমার স্ত্রী যদি তোমাকে স্মরণ করে সময় নষ্ট করেন?
অন্নদা। তা হলে তাঁর প্রতি আমার উপদেশ এই যে, আর অধিক নষ্ট করা উচিত হয় না; হয় বিস্মরণ করতে আরম্ভ করুন নয় দর্শন দিন— সময়টা মূল্যবান জিনিস।
মাতাজি। সেই উপদেশই শিরোধার্য। আমিই তোমার সেবিকা শ্রীমতী মহীমোহিনী দেবী
অন্নদা। বাঁচালে! মনে যেরকম ভাবোদ্রেক করেছিলে, নিজের স্ত্রী না হলে গলায় দড়ি দিতে হত। কিন্তু নিজের স্বামীর জন্য এ-সমস্ত ব্যাপার কেন?
মাতাজি। গুরুর কাছে যে বশীকরণ-মন্ত্র শিখেছিলেম আগে সেইটে প্রয়োগ করে তবে আত্মপরিচয় দিলেম, এখন আর তোমর