ফর্নাণ্ডিজ। না মহারাজ, জমছে না, আমার বুকে বাজছে — আর-এক দিনের কথা মনে পড়ছে।
রামচন্দ্র। গুজবটা কি সত্য।
ফর্নাণ্ডিজ। কিসের গুজব।
রামচন্দ্র। ঐ তাঁরা কি যশোর থেকে আসছেন।
ফর্নাণ্ডিজ। হাঁ মহারাজ, শুনেছি বটে। আদেশ করেন তো তাঁদের এগিয়ে আনি গে।
রামচন্দ্র। এগিয়ে আনবে? তা হলে কিন্তু মন্ত্রী রমাই সবাই হাসবে।
ফর্নাণ্ডিজ। আদেশ করেন তো ওদের হাসিসুদ্ধ মুখ একেবারে চেঁছে পরিষ্কার করে দিই।
রামচন্দ্র। না, না, গোলমাল করে কাজ নেই। কিন্তু সেনাপতি, আমি তোমাকে গোপনে বলছি, কাউকে বোলো না, আমি তাকে কিছুতে ভুলতে পারছি নে। কালই রাত্রে তাকে স্বপ্নে দেখেছি।
ফর্নাণ্ডিজ। মহারাজ, আমি আর কী বলব — তাঁর জন্যে প্রাণ দিলে যদি কোনো কাজেও না লাগে তবু দিতে ইচ্ছা হচ্ছে।
রামচন্দ্র। দেখো সেনাপতি, এক কাজ করলে হয় না?
ফর্নাণ্ডিজ। কী বলুন।
রামচন্দ্র। মোহন যদি একবার খবর পায় যে, তাঁরা আসছেন তা হলে সে আপনি ছুটে যাবে। একবার কোনোমতে তাকে সংবাদটা জানাও-না। কিন্তু দেখো, আমার নাম কোরো না।
ফর্নাণ্ডিজ। যে আজ্ঞা মহারাজ।
রমাইয়ের প্রবেশ
রমাই। মহারাজ, যশোর থেকে তো কেউ নিমন্ত্রণ রাখতে এল না। রাগ করলে বা।
রামচন্দ্র। হা, হা, হা, হা।
রমাই। আপনার প্রথম পক্ষের শ্বশুর তো সেবার তাঁর কন্যার সিঁথির সিঁদুরের উপর হাত বুলাবার চেষ্টায় ছিলেন — এবারে তাঁকে —
রামমোহন দ্রুত আসিয়া
রামমোহন। চুপ। আর একটি কথা যদি কও তা হলে —
রমাই। বুঝেছি বাবা, আর বলতে হবে না।
রামমোহন। মহারাজ, হাসবেন না মহারাজ। আজকের দিনে অনেক সহ্য করেছি, কিন্তু মহারাজার ঐ হাসি সহ্য করতে পারছি নে।
রামচন্দ্র। ফের বেয়াদবি করছিস।
রামমোহন। আমার বেয়াদবি! বেয়াদবি কে করলে বুঝলে না!
ফর্নাণ্ডিজ। মোহন, একটা কথা আছে ভাই, একটু এ দিকে এস।
[ উভয়ের প্রস্থান