রমাই। আপনি তো চলে এলেন, এ দিকে যুবরাজ বাবাজি বিষম গোলে পড়লেন।
মন্ত্রী। কী রকম হে রমাই।
রমাই। রাজার অভিপ্রায় ছিল, কন্যাটি বিধবা হলে হাতের নোয়া আর বালা দুগাছি বিক্রি করে রাজকোষে কিঞ্চিৎ অর্থাগম হয়। যুবরাজ তাতে ব্যাঘাত করাতে তম্বি কত।
মন্ত্রী। মহারাজ, শুনতে পাই প্রতাপাদিত্য আপসোসে সারা হচ্ছেন। এ দিকে একটু ইশারা করলেই নিজের খরচে এখনো মেয়েটিকে পৌঁছিয়ে দিতে রাজি।
রমাই। সেটা বিনি-খরচায় হতে পারে, কিন্তু ফিরে পাঠাবার খরচাটা মহারাজের নিজের গাঁট থেকে দিতে হবে।
মন্ত্রী। সে তো বটেই। বিবাহ করেছেন তাঁদের বাড়িতে, কিন্তু নিজের বাড়িতে আনবার বেলা তো বিচার করতে হয়। কী বল রমাই।
রমাই। সে তো বটেই। পাঁকে যদি মহারাজা পা দিয়ে থাকেন সে তো পাঁকের বাবার ভাগ্যি, তা বলে ঘরে ঢোকবার সময় পা ধুয়ে আসবেন না?
মন্ত্রী। বেশ বলেছ রমাই।
রমাই। মন্ত্রিবর, শুভকর্মে মহারাজের যশুরে শ্বশুরমশায়কে একখানা নিমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে তো? কী জানি, মনে দুঃখ করতেও পারেন।
সকলের হাস্য
বরণ করবার জন্যে এয়োস্ত্রীদের মধ্যে শাশুড়ি-ঠাকরুনকেও ভুললে চলবে না। মিষ্টান্নমিতরে জনাঃ, সেটাও চাই — অতএব সেখানে যখন মিষ্টান্ন পাঠানো হবে তখন সেই সঙ্গে দুচারছড়া কাঁচা রম্ভাও পাঠানো ভালো। কী বল মন্ত্রী।
মন্ত্রী। তার উপরে কথা।
উচ্চহাস্য
রমাই। আর দেখেন মহারাজ, যুবরাজকে একখানা পত্র লিখে জানাবেন যে, তোমাদের রাজত্ব রাজকন্যা তোমাদেরই থাক্, প্রজাপতির কৃপায় জগতে শালা-শ্বশুরের অভাব নেই। কী বলেন আপনারা।
সকলের উচ্চহাস্য
রামচন্দ্র। রমাই, তুমি যাও, লোকজনদের দেখো-গে।
[ রমাইয়ের প্রস্থান
সেনাপতি, তুমি এইখানে বোসো, রমাইয়ের হাসি আমার ভালো লাগছে না।
সেনাপতি ফর্নাণ্ডিজ। মহারাজ, রমাইয়ের হাসি গন্ধকের ধোঁয়ার মতো, তার ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে আসে।
রামচন্দ্র। ঠিক বলেছ সেনাপতি, আমার ইচ্ছে হচ্ছিল উঠে চলে যাই। আজ গান বাজনা ভালো জমছে না ফর্নাণ্ডিজ।