সহসা শ্রীশের প্রবেশ
‘ মাপ করবেন' বলিয়া পলায়নোদ্যম। নৃপ ও নীরর সবেগে প্রস্থান
অক্ষয়। এসো এসো শ্রীশবাবু।
শ্রীশ। ( সলজ্জভাবে ) মাপ করবেন।
অক্ষয়। রাজি আজি, কিন্তু অপরাধটা কী আগে বলো।
শ্রীশ। খবর না দিয়েই —
অক্ষয়। তোমার অভ্যর্থনার জন্য ম্যুনিসিপালিটির কাছ থেকে যখন বাজেট স্যাংশন করে নিতে হয় না তখন নাহয় খবর না দিয়েই এলে শ্রীশবাবু।
শ্রীশ। আপনি যদি বলেন এখানে আমার অসময়ে অনধিকার প্রবেশ হয় নি, তা হলেই হল।
অক্ষয়। তাই বললেম। তুমি যখনই আসবে তখনই সুসময়, এবং যেখানে পদার্পণ করবে সেইখানেই তোমার অধিকার। শ্রীশবাবু, স্বয়ং বিধাতা সর্বত্র তোমাকে পাস্পোর্ট দিয়ে রেখেছেন। একটু বোসো, অবলাকান্তবাবুকে খবর পাঠিয়ে দিই। ( স্বগত ) না পলায়ন করলে চিঠি শেষ করতে পারব না।
[ প্রস্থান
শ্রীশ। চক্ষের সম্মুখ দিয়ে এক জোড়া মায়াস্বর্ণমৃগী ছুটে পালালো। ওরে নিরস্ত্র ব্যাধ, তোর ছোটবার ক্ষমতা নেই। নিকষের উপর সোনার রেখার মতো চকিত চোখের চাহনি দৃষ্টিপথের উপরে যেন আঁকা রয়ে গেল।
শ্রীশ। সন্ধেবেলায় এসে আপনাদের তো বিরক্ত করি নি রসিকবাবু?
রসিক। ভিক্ষুকক্ষে বিনিক্ষিপ্তঃ কিমিক্ষুর্নীরসো ভবেৎ? শ্রীশবাবু, আপনাকে দেখে বিরক্ত হব আমি কি এতবড়ো হতভাগ্য।
শ্রীশ। অবলাকান্তবাবু বাড়ি আছেন তো?
রসিক। আছেন বৈকি। এলেন ব'লে।
শ্রীশ। না না, যদি কাজে থাকেন তা হলে তাঁকে ব্যস্ত করে কাজ নেই — আমি কুঁড়ে লোক, বেকার মানুষের সন্ধানে ঘুরে বেড়াই।
রসিক। সংসারে সেরা লোকেরাই কুঁড়ে, এবং বেকার লোকেরাই ধন্য। উভয়ের সম্মিলন হলেই মণিকাঞ্চনযোগ। এই কুঁড়ে - বেকারের মিলনের জন্যেই তো সন্ধেবেলাটার সৃষ্টি হয়েছে। যোগীদের জন্যে সকালবেলা, রোগীদের জন্যে রাত্রি, কাজের লোকের জন্যে দশটা - চারটে। আর সন্ধেবেলাটা, সত্যি কথা বলছি, চিরকুমার - সভার অধিবেশনের জন্যে চতুর্মুখ সৃজন করেন নি। কী বলেন শ্রীশবাবু।
শ্রীশ। সে কথা মানতে হবে বৈকি। সন্ধ্যা চিরকুমার - সভার অনেক পূর্বেই সৃজন হয়েছে, সে আমাদের সভাপতি চন্দ্রবাবুর নিয়ম মানে না —
রসিক। সে যে - চন্দ্রের নিয়ম মানে, তার নিয়মই আলাদা। আপনার কাছে খুলে বলি, হাসবেন না শ্রীশবাবু, আমার একতলার ঘরে কায় ক্লেশে একটি জানলা দিয়ে অল্প একটু জ্যোৎ স্না আসে ; শুক্লসন্ধ্যায় সেই জ্যোৎ স্নার শুভ্র রেখাটি যখন আমার