আমি তোমারি জয় গাই।
তোমার শিকলভাঙা এমন রাঙা মূর্তি দেখি নাই।
তুমি দু হাত তুলে আকাশ-পানে
মেতেছ আজ কিসের গানে,
একি আনন্দময় নৃত্য অভয় বলিহারি যাই।
যেদিন ভবের মেয়াদ ফুরাবে ভাই,
আগল যাবে সরে-
সেদিন হাতের দড়ি পায়ের বেড়ি
দিবি রে ছাই করে।
সেদিন আমার অঙ্গ তোমার অঙ্গে
ওই নাচনে নাচবে রঙ্গে,
সকল দাহ মিটবে দাহে
ঘুচবে সব বালাই।
[ প্রস্থান
প্রতাপাদিত্য ও মন্ত্রীর প্রবেশ
প্রতাপ। দৈবাৎ আগুন লাগার কথা আমি একবর্ণ বিশ্বাস করি নে। এর মধ্যে চক্রান্ত আছে। খুড়ো কোথায়?
মন্ত্রী। তাঁকে দেখা যাচ্ছে না।
প্রতাপ। হুঁ। তিনিই এই অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়ে ছোঁড়াটাকে নিয়ে পালিয়েছেন।
মন্ত্রী। তিনি সরল লোক — এ-সকল বুদ্ধি তো তাঁর আসে না।
প্রতাপ। বাইরে থেকে যাকে সরল বলে বোধ হবে না তার কুটিল বুদ্ধি বৃথা।
মন্ত্রী। কারাগার ভস্মসাৎ হয়ে গেছে। আমার আশঙ্কা হচ্ছে যদি —
প্রতাপ। কোনো আশঙ্কা নেই, আমি বলছি উদয়কে নিয়ে খুড়োমহারাজ পালিয়েছেন। বৈরাগীটার খবর
পেয়েছ?
মন্ত্রী। না মহারাজ।
প্রতাপ। সে বোধ হয় পালিয়েছে। সে যদি থাকে তো আমার কাছে পাঠিয়ে দিয়ো।
মন্ত্রী। কেন মহারাজ, তাকে আবার কিসের প্রয়োজন।
প্রতাপ। আর কিছু নয় — সেই ভাঁড়টাকে নিয়ে একটু আমোদ করতে পারতুম, তার কথা শুনতে মজা আছে।
ধনঞ্জয়ের প্রবেশ
ধনঞ্জয়। জয় হোক মহারাজ। আপনি তো আমাকে ছাড়তেই চান না, কিন্তু কোথা থেকে আগুন ছুটির পরোয়ানা নিয়ে হাজির ; কিন্তু না বলে যাই কী করে। তাই হুকুম নিতে এলুম।