অক্ষয়। এরা দেখছি পবিত্র জেনানা আর রাখতে দিলে না। আরে দুর্বৃত্তে, এখনই লোক আসবে।
নৃপবালা। তার চেয়ে বলো - না দিদির চিঠিখানা শেষ করতে হবে।
নীরবালা। তা, আমরা থাকলেমই বা, তুমি চিঠি লেখো - না, আমরা কি তোমার কলমের মুখ থেকে কথা কেড়ে নেব না কি।
অক্ষয়। তোমরা কাছাকাছি থাকলে মনটা এইখানেই মারা যায়, দূরে যিনি আছেন সে পর্যন্ত আর পৌঁছয় না। না, ঠাট্টা নয়, পালাও। এখনই লোক আসবে — ঐ একটি বৈ দরজা খোলা নেই, তখন পালাবার পথ পাবে না।
নৃপবালা। এই সন্ধেবেলায় কে তোমার কাছে আসবে।
অক্ষয়। যাদের ধ্যান কর তারা নয় গো, তারা নয়।
নীরবালা। যার ধ্যান করা যায় সে সকল সময় আসে না, তুমি আজকাল সেটা বেশ বুঝতে পারছ, কী বল মুখুজ্জেমশায়। দেবতার ধ্যান কর আর উপদেবতার উপদ্রব হয়। —
গান
ও আমার ধ্যানেরই ধন,
তোমায় হৃদয়ে দোলায় যে হাসি রোদন।
আসে বসন্ত, ফোটে বকুল,
কুঞ্জে পূর্ণিমা - চাঁদ হেসে আকুল —
তারা তোমায় খুঁজে না পায়,
প্রাণের মাঝে আছ গোপন স্বপন।
অক্ষয়। সংগ্রহ হল কোথা থেকে।
নীরবালা। তোমারই শ্রীমুখ থেকে।
অক্ষয়। অবশেষে বিরহের দিনে আমারই শ্রীবক্ষে হানতে এসেছিস। আচ্ছা, তা হলে দয়া করিস নে, একেবারে শেষ করে দে।
নীরবালা। —
আঁখিরে ফাঁকি দাও একি ধারা —
অশ্রুজলে তারে কর সারা।
গন্ধ আসে, কেন দেখি নে মালা
পায়ের ধ্বনি শুনি, পথ নিরালা।
বেলা যে যায়, ফুল যে শুকায় —
অনাথ হয়ে আছে আমার ভুবন।
নেপথ্যে। অবলাকান্তবাবু আছেন?