ভাবছ হবে তুমিই যা চাও,
জগৎ টাকে তুমিই নাচাও-
দেখবে হঠাৎ নয়ন খুলে
হয় না যেটা সেটাও হবে।
মন্ত্রীর প্রবেশ
প্রতাপ। তুমি ঠিক সময়েই এসেছ। এই বৈরাগীকে এইখানেই ধরে রেখে দাও। ওকে মাধবপুরে যেতে
দেওয়া হবে না।
মন্ত্রী। মহারাজ —
প্রতাপ। কী। হুকুমটা তোমার মনের মতো হচ্ছে না বুঝি।
উদয়। মহারাজ, বৈরাগীঠাকুর সাধুপুরুষ।
প্রজারা। মহারাজ, এ আমাদের সহ্য হবে না। মহারাজ, অকল্যাণ হবে।
ধনঞ্জয়। আমি বলছি, তোরা ফিরে যা। হুকুম হয়েছে আমি দুদিন রাজার কাছে থাকব, বেটাদের সেটা সহ্য
হল না।
প্রজারা। আমরা এইজন্যেই কি দরবার করতে এসেছিলুম? আমরা যুবরাজকেও পাব না, তোমাকেও
হারাব?
ধনঞ্জয়। দেখ্, তোদের কথা শুনলে আমার গা জ্বালা করে। হারাবি কি রে বেটা। আমাকে তোদের গাঁঠে
বেঁধে রেখেছিলি? তোদের কাজ হয়ে গেছে, এখন পালা সব পালা।
প্রজারা। মহারাজ, আমরা কি আমাদের যুবরাজকে পাব না।
প্রতাপ। না।
সুরমা। বিভা, ভাই বিভা, তোর চোখে যদি জল দেখতুম তা হলে আমার মনটা যে খোলসা হত। তোর
হয়ে যে আমার কাঁদতে ইচ্ছা করে ভাই, সব কথাই কি এমনি করে চেপে রাখতে হয়।
বিভা। কোনো কথাই তো চাপা রইল না বউরানী। ভগবান তো লজ্জা রাখলেন না।
সুরমা। আমি কেবল এই কথাই ভাবি যে, জগতে সব দাহই জুড়িয়ে যায়। আজকের মতো এমন কপাল-পোড়া সকাল তো রোজ আসবে না। সংসার লজ্জা দিতেও যেমন, লজ্জা মিটিয়ে দিতেও তেমনি। সব ভাঙাচোরা জুড়ে আবার দেখতে দেখতে ঠিক হয়ে যায়।
বিভা। ঠিক নাও যদি হয়ে যায় তাতেই বা কী। যেটা হয় সেটা তো সইতেই হয়।