বিপিন। ( স্বাভাবিক সুগম্ভীর শান্ত স্বরে ) পৃথিবী যত বেশি পঙ্কিল পৃথিবীর সংশোধনকার্য তত বেশি পবিত্র।
শ্রীশ। সভার অধিবেশনে স্ত্রীসভ্য লওয়া সম্বন্ধে নিয়মমত প্রস্তাব উত্থাপন করে যা স্থির হয় আপনাকে জানাব।
নির্মলা এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করিয়া নিঃশব্দে চলিয়া যাইবার উপক্রম করিল
চন্দ্র। ( হঠাৎ ) ফেনি, আমার সেই গলার বোতামটা?
নির্মলা। ( সলজ্জ হাসিয়া মৃদুকণ্ঠে ) গলাতেই আছে।
চন্দ্র। ( গলায় হাত দিয়া ) হাঁ হাঁ, আছে বটে।
তিন ছাত্রের দিকে চাহিয়া হাসিলেন
নৃপবালা। আজকাল তুই মাঝে মাঝে কেন অমন গম্ভীর হচ্ছিস বল্ তো নীরু।
নীরবালা। আমাদের বাড়ির যত কিছু গাম্ভীর্য সব বুঝি তোর একলার? আমার খুশি আমি গম্ভীর হব।
নৃপবালা। তুই কী ভাবছিস আমি বেশ জানি।
নীরবালা। তোর অত আন্দাজ করবার দরকার কী ভাই। এখন তোর নিজের ভাবনা ভাববার সময় হয়েছে।
নৃপবালা। ( নীরর গলা জড়াইয়া ) তুই ভাবছিস, মাগো মা, আমরা কী জঞ্জাল — আমাদের বিদায় করে দিতেও এত ভাবনা এত ঝঞ্ঝাট।
নীরবালা। তা, আমরা তো ভাই, ফেলে দেবার জিনিস নয় যে অমনি ছেড়ে দিলেই হল। আমাদের জন্যে যে এতটা হাঙ্গামা হচ্ছে সে তো গৌরবের কথা। কুমারসম্ভবে তো পড়েছিস গৌরীর বিয়ের জন্য একটি আস্ত দেবতা পুড়ে ছাই হয়ে গেল। যদি কোনো কবির কানে ওঠে তা হলে আমাদের বিবাহের একটা বর্ণনা বেরিয়ে যাবে।
নৃপবালা। না ভাই, আমার ভারি লজ্জা করছে।
নীরবালা। আর, আমার বুঝি লজ্জা করছে না? আমি বুঝি বেহায়া? কিন্তু কী করবি বল্। ইস্কুলে যেদিন প্রাইজ নিতে গিয়েছিলুম লজ্জা করেছিল, আবার তার পর-বছরেও প্রাইজ নেবার জন্যে রাত জেগে পড়া মুখসথ করেছিলেম। লজ্জাও করে, প্রাইজও ছাড়ি নে, আমার এই স্বভাব।
নৃপবালা। আচ্ছা নীরু, এবারে যে প্রাইজটার কথা চলছে সেটার জন্যে তুই কি খুব ব্যস্ত হয়েছিস।
নীরবালা। কোন্টা বল্ দেখি। চিরকুমার - সভার দুটো সভ্য?
নৃপবালা। যেই হোক - না কেন, তুই তো বুঝতে পারছিস।
নীরবালা। তা ভাই সত্যি কথা বলব? ( নৃপর গলা জড়াইয়া কানে কানে ) শুনেছি কুমার - সভার দুটি সভ্যের মধ্যে খুব