তোমার হাতে আমার ঘোড়া
লাগাম-পরানো।
বসন্ত। খাঁ-সাহেব, এই তো জমে গেল। আজ পথে বাধা পেয়েছিলুম বলেই তো। যিনি বাগড়া দেন জয় হোক
তাঁর।
ধনঞ্জয়। আজ বেরিয়েছ কোন্ ডাকে মহারাজ?
বসন্ত। যশোরে চলেছিলুম। ঠাকুর, গ্রামে ডাকাত পড়েছে খবর পেয়ে লোকজনদের সব পাঠিয়ে দিয়েছি।
তাই খাঁ-সাহেবকে নিয়ে এই রাস্তার মধ্যেই মজলিশ জমে গেল।
ধনঞ্জয়। রাস্তার মাঝখানে হঠাৎ-মজলিশেই মজা মহারাজ। আমিও তোমার এ সভায় হঠাৎ-দরবারী।
গান
তুমি হঠাৎ-হাওয়ায় ভেসে-আসা ধন-
তাই হঠাৎ-পাওয়ায় চমকে ওঠে মন।
বসন্ত। বেশ, বেশ ঠাকুর। যা নিত্যি জোটে তা থাক্ পড়ে-এই হঠাতের টানেই তো বাঁধন কাটে।
ধনঞ্জয়।– গোপন পথে আপন মনে
বাহির হও যে কোন্ লগনে,
হঠাৎ-গন্ধে মাতাও সমীরণ!
বসন্ত। হায় হায় ঠাকুর-বড়ো শুভক্ষণেই বেরিয়েছিলুম-দেহমন শিউরে উঠছে।
ধনঞ্জয়।– নিত্য যেথায় আনাগোনা
হয় না সেথায় চেনাশোনা,
উড়িয়ে ধুলো আসছে কতই জন।
বসন্ত। আহা, ভিড়ের মধ্যে হল না দেখা! দিন গেল বৃথা।
ধনঞ্জয়।– কখন পথের বাহির থেকে
হঠাৎ বাঁশি যায় যে ডেকে
পথহারাকে করে সচেতন।
বসন্ত। এসো ঠাকুর, একবার কোলাকুলি করে নিই।
প্রজা। কোথায় চলেছ মহারাজ?
বসন্ত। প্রতাপ আমাকে ডেকেছে, তাই যশোরে চলেছি।
প্রজা। রায়গড়ে ফিরে যাও আজ রাত্তিরেই।
বসন্ত। কেন বলো দেখি?
প্রজা। নানারকম গুজব কানে আসে। ভালো লাগে না।
ধনঞ্জয়। কোথাকার অযাত্রা এরা সব? নিজেরাও চলবি নে ভয়ে, অন্যকেও চলতে দিবি নে?
প্রজা। দেখছ না ঠাকুর, পাঠানটা হঠাৎ কখন সরে গেল?
ধনঞ্জয়। তোদের সঙ্গ ওর ভালো লাগল না, তাতে আর আশ্চর্য কী রে। সবাই কি তোদের সহ্য করতে পারে?