ক্লান্ত যখন আম্রকলির কাল,
মাধবী ঝরিল ভূমিতলে অবসন্ন,
সৌরভধনে তখন তুমি হে শাল,
বসন্তে করো ধন্য।
সান্ত্বনা মাগি দাঁড়ায় কুঞ্জভূমি
রিক্তবেলায় অঞ্চল যবে শূন্য —
বনসভাতলে সবার ঊর্ধ্বে তুমি,
সব অবসানে তোমার দানের পুণ্য॥
এইবার শেষ দেওয়া-নেওয়া চুকিয়ে দাও। দিয়ে দাও তোমার বাহিরের দান, উত্তরীয়ের সুগন্ধ, বাঁশির গান, আর নিয়ে যাও আমার অন্তরের বেদনা নীরবতার ডালি থেকে।
তুমি কিছু দিয়ে যাও
মোর প্রাণে গোপনে গো।
ফুলের গন্ধে, বাঁশির গানে,
মর্মরমুখরিত পবনে।
তুমি কিছু নিয়ে যাও
বেদনা হতে বেদনে —
যে মোর অশ্রু হাসিতে লীন,
যে বাণী নীরব নয়নে॥
দূরের বাণীকে জাগিয়ে গিয়ে গেল পথিক। এমনি করেই বারে বারে সে কাছের বন্ধন আল্গা করে দেয়। একটা অপরিচিত ঠিকানার উদ্দেশ বলে দিয়ে যায় কানে কানে, সাহসের সুর এসে পৌঁছয় বিচ্ছেদসমুদ্রের পরপার থেকে — মন উদাস হয়ে যায়।
বাজে করুণ সুরে (হায় দূরে)
তব চরণতলচুম্বিত পন্থবীণা।
মম পান্থচিত চঞ্চল
জানি না কী উদ্দেশে।
যূথীগন্ধ অশান্ত সমীরে
ধায় উতলা উচ্ছ্বাসে,
তেমনি চিত্ত উদাসী রে
নিদারুণ বিচ্ছেদের নিশীথে।