বাতাসে লুকায়ে থেকে
কে-যে তোরে গেছে ডেকে,
পাতায় পাতায় তোরে পত্র সে-যে গেছে লেখি।
কখন্ দখিন হতে কে দিল দুয়ার ঠেলি,
চমকি উঠিল জাগি চামেলি নয়ন মেলি।
বকুল পেয়েছে ছাড়া,
করবী দিয়েছে সাড়া,
শিরীষ শিহরী উঠে দূর হতে কারে দেখি॥
—
তুমি কোন্ ভাঙনের পথে এলে সুপ্ত রাতে,
আমার ভাঙল যা তাই ধন্য হল চরণপাতে।
নন্দিনী, ঐ দেখে নাও শিশুর লীলা, ঐ-যে কচি কিশলয় —
শ্যামল কোমল চিকন রূপের নবীন শোভা — দেখে যা —
কল-উতরোল চঞ্চলদোল ওই-যে বোবা।
শিশু হয়ে এসেছে চিরনবীন, কিশলয়ে তার ছেলেখেলা জমাবার জন্যে। দোসর হয়ে তার সঙ্গে যোগ দিল ঐ সূর্যের আলো, সেও সাজল শিশু, সারাবেলা সে কেবল ঝিকিমিক করছে। সেই তো তার কলপ্রলাপ। ওদের নাচে নাচে মুখরিত হয়ে উঠল প্রাণগীতিকার প্রথম ধুয়োটি।
ওরা অকারণে চঞ্চল।
ডালে ডালে দোলে বায়ুহিল্লোলে
নবপল্লবদল।
ছড়ায়ে ছড়ায়ে ঝিকিমিকি আলো
দিকে দিকে ওরা কী খেলা খেলালো —
মর্মরতানে প্রাণে ওরা আনে
কৈশোরকোলাহল।
ওরা কান পেতে শোনে গগনে গগনে
নীরবের কানাকানি,
নীলিমার কোন্ বাণী।
ওরা প্রাণঝরনার উচ্ছল ধার
ঝরিয়া ঝরিয়া বহে অনিবার,
চিরতাপসিনী ধরণীর ওরা
শ্যামশিখা হোমানল॥