
Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (http://rabindra-rachanabali.nltr.org)
নটরাজ- শরৎ, ২২
নটরাজ
যূথীগুলি সকরুণ গন্ধে
আজি তারে বন্দে,
নীপবন মর্মর ছন্দে
জাগে তার স্তবনে।
শ্যামঘন তমালের কুঞ্জে
পল্লবপুঞ্জে।
আজি শেষ মল্লারে গুঞ্জে
বিচ্ছেদগীতিকা,
আজি মেঘ বর্ষণরিক্ত
নিঃশেষবিত্ত,
দিল করি শেষ অভিষিক্ত
কিংশুকবীথিকা।
শরৎ
ধ্বনিল গগনে আকাশ-বাণীর বীন,
শিশির-বাতাসে দূরে দূরে ডাক দিল কে?
আয় সুলগনে, আজ পথিকের দিন,
এঁকে নে ললাট জয়যাত্রার তিলকে।
গেল খুলি গেল মেঘের ছায়ার দ্বার,
দিকে দিকে ঘোচে কালো আবরণভার,
তরুণ আলোক মুকুট পরেছে তার,
বিজয়শঙ্খ বেজে ওঠে তাই ত্রিলোকে।
শরৎ এনেছে অপরূপ রূপকথা
নিত্যকালের বালকবীরের মানসে।
নবীন রক্তে জাগায় চঞ্চলতা,
বলে,— চলো চলো, অশ্ব তোমার আনো'সে
ধেয়ে যেতে হবে দুস্তর প্রান্তরে,
বন্দিনী কোন্ রাজকন্যার তরে,
মায়াজাল ভেদি চলো সে রুদ্ধ ঘরে,
লও কার্মুক, দানবের বুক হানো ' সে।