ভূমিকার গান। ভাবটা এই, মনের নানা গম্ভীর আকাঙ্ক্ষা কাহিনীতে রূপকে গানে রূপ নেয় ছন্দে বন্ধে, সঙ্গ রচনা করে কল্পনায়, সঙ্গ রচনা করে কল্পনায়, বস্তুজগৎ থেকে ক্ষণকালের ছুটি নিয়ে কল্পজগতে করে লীলা।
এ শুধু অলস মায়া— এ শুধু মেঘের খেলা,
এ শুধু মনের সাধ বাতাসেতে বিসর্জন,
এ শুধু আপনমনে মালা গেঁথে ছিঁড়ে ফেলা,
নিমেষের হাসি কান্না গান গেয়ে সমাপন।
শ্যামল পল্লবপাতে রবিকরে সারা বেলা
আপনারি ছায়া লয়ে খেলা করে ফুলগুলি,
এও সেই ছায়া-খেলা বসন্তের সমীরণে।
কুহকের দেশে যেন সাধ ক’রে পথ ভুলি
হেথা হোথা ঘুরি ফিরি সারাদিন আনমনে।
কারে যেন দেব বলে কোথা যেন ফুল তুলি,
সন্ধ্যায় বনের ফুল উড়ে যায় বনে বনে।
এ খেলা খেলিবে হায়,খেলার সাথী কে আছে।
ভুলে ভুলে গান গাই— কে শোনে কে নাই শোনে—
যদি কিছু মনে পড়ে,যদি কেহ আসে কাছে॥
গন্ধর্ব সৌরসেন সুরসভায় গীতনায়কদের অগ্রণী। সেদিন তার প্রেয়সী মধুশ্রী গেছে সুমেরুশিখরে সূর্যপ্রদক্ষিণে। সৌরসেনের বিরহীচিত্ত ছিল উৎকণ্ঠিত। অনবধানে তার মৃদঙ্গের তাল গেল কেটে, নৃত্যে উর্বশীর শমে পড়ল বাধা, ইন্দ্রাণীর কপোল উঠল রাঙা হয়ে।
পাছে সুর ভুলি এই ভয় হয়,
পাছে ছিন্ন তারের জয় হয়।
পাছে উৎসবক্ষণ তন্দ্রালসে হয় নিমগন,
পুণ্য লগন
হেলায় খেলায় ক্ষয় হয়,
পাছে বিনা গানেই মিলনবেলা ক্ষয় হয়।
যখন তাণ্ডবে মোর ডাক পড়ে,
পাছে তার তালে মোর তাল না মেলে
সেই ঝড়ে।
যখন মরণ এসে ডাকবে শেষে বরণগানে,
পাছে প্রাণে