কুমুদিনী। কালুদা, আমার কাছে লুকিয়ো না, দাদা টাকা ধার করতে এসেছে।
কালু। তা ধার করেই তো ধার শুধতে হবে ; টাকা তো আকাশ থেকে পড়ে না। কুটুম্বদের খাতক হয়ে থাকাটা তো ভালো নয়।
কুমুদিনী। সে তো ঠিক কথা, তা টাকার জোগাড় করতে পেরেছ?
কালু। ঘুরে-ঘেরে দেখছি, হয়ে যাবে, ভয় কী?
কুমুদিনী। না, আমি জানি, সুবিধে করতে পার নি।
কালু। আচ্ছা ছোটোখুকি, সবই যদি জান, আমাকে জিজ্ঞাসা করা কেন? ছেলেবেলায় একদিন আমার গোঁফ টেনে ধরে জিজ্ঞাসা করেছিলে, গোঁফ হল কেমন করে? বলেছিলুম, সময় বুঝে গোঁফের বীজ বুনেছিলুম বলে। তাতেই প্রশ্নটার তখনি নিষ্পত্তি হয়ে গেল। এখন হলে জবাব দেবার জন্যে ডাক্তার ডাকতে হত। সব কথাই যে তোমাকে স্পষ্ট করে জানাতে হবে সংসারের এমন নিয়ম নয়।
কুমুদিনী। আমি তোমাকে বলে রাখছি, কালুদা, দাদার সম্বন্ধে সব কথাই আমাকে জানতে হবে।
কালু। কী করে দাদার গোঁফ উঠল, তাও?
কুমুদিনী। দেখো, অমন করে কথা চাপা দিতে পারবে না। আমি দাদার মুখ দেখেই বুঝেছি, টাকার সুবিধে করতে পার নি।
কালু। ও-সব কথা থাক্ খুকি, এখানে যে তুমি আজ চলে এলে, তার মধ্যে তো কোনো কাঁটাখোঁচা
নেই? ঠিক সত্যি করে বলো।
কুমুদিনী। আছে কি না তা আমি খুব স্পষ্ট করে জানি নে।
কালু। স্বামীর সম্মতি পেয়েছ?
কুমুদিনী। না চাইতেই তিনি সম্মতি দিয়েছেন।
কালু। রাগ করে?
কুমুদিনী। তাও আমি ঠিক জানি নে ; বলেছেন, ডেকে পাঠাবার আগে আমার যাবার দরকার নেই।
কালু। সে কোনো কাজের কথা নয় ; তার আগেই যেয়ো, নিজে থেকেই যেয়ো।
কুমুদিনী। গেলে হুকুম মানা হবে না।
কালু। আচ্ছা, সে আমি দেখব।
কুমুদিনী। চললুম, কাজ আছে।
[ কুমুদিনীর ও কালুর প্রস্থান
চাকরের প্রবেশ
চাকর। ও বাড়ির নবীনবাবু এসেছেন।
বিপ্রদাস। ডেকে আনো।
[ চাকরের প্রস্থান ]। নবীনের প্রবেশ
আসুন নবীনবাবু, এইখানে বসুন।