নবীন। আজই এসেছেন! তাঁর তো —
কুমুদিনী। লিখেছেন, বিশেষ কারণে আজই আসতে হল।
নবীন। বউরানী, তাঁর কাছে তো কালই যাওয়া চাই।
কুমুদিনী। না, আমি যাব না।
মুখে আঁচল চেপে কান্না
মোতির মা। কেন, কী হল দিদি?
কুমুদিনী। দাদা আমাকে যেতে বারণ করেছেন।
নবীন। বউরানী, তুমি নিশ্চয় ভুল করেছ।
কুমুদিনী। না, এই তো লিখেছেন।
নবীন। কোথায় ভুল করেছ বলব? তোমার দাদা নিশ্চিত ঠিক করেছেন যে, আমার দাদা তোমাকে তাঁদের ওখানে যেতে দেবেন না। সেই অপমান থেকে বাঁচাবার জন্যে তিনি তোমার রাস্তা সোজা করে দিয়েছেন। বুঝতে পেরেছ?
কুমুদিনী। পেরেছি।
কুমুদিনীর চিবুক ধরে
মোতির মা। বাস্ রে! দাদার কথার একটু আড় হাওয়াতেই অভিমানের সমুদ্র উথলে ওঠে।
নবীন। বউরানী, কাল তা হলে তোমার যাবার আয়োজন করি।
কুমুদিনী। না, তার দরকার নেই।
নবীন। দরকার আমাদের পক্ষেই যে আছে। তোমার দাদাকে দেখতে যাবার বাধা ঘটলে সে নিন্দে আমাদের সইবে কেন? চুপ করে রইলে কেন বউরানী? তোমার যাওয়া ঘটবেই, আর কালই ঘটবে এ আমি বলে দিচ্ছি।
মোতির মা। কী উপায়টা ভেবেছ একটু খোলসা করে বলো দেখি বুদ্ধিমান।
নবীন। দাদাকে গিয়ে বলব, বউরানীকে ওদের ওখানে যেতে দেওয়া চলবেই না। তুমি হয়তো রাজি হতে পার, কিন্তু এ অপমান আমরা সইব না। শুনলেই দাদা আমার উপরে আগুন হয়ে উঠবে। তখনি পালকির হুকুম হবে। ওই-যে আসছেন দাদা।
[ উভয়ের প্রস্থান
মধুসূদনের প্রবেশ
মধুসূদন। শুতে আসবে না বড়োবউ? এখানে তোমার ঠাণ্ডা লাগবে যে। চলো, তোমার আপন ঘরে। যেতে ইচ্ছে করছে না? বড়োবউ, দোষ করে থাকি তো মাপ করো! আমি তোমার অযোগ্য — আমাকে দয়া করবে না?
কুমুদিনী। ছি ছি, অমন করে বোলো না। আমাকে অপরাধী কোরো না। আমি তোমার দাসী। আমাকে আদেশ করো।