হা হা হা! এলাচদানা! তাই বলো! এলাচদানা লুকিয়ে খাবার কী দরকার? এতে লজ্জা কিসের? রোজ আনিয়ে দেব — কত চাও! আমাকে আগে বললে না কেন?
কুমুদিনী। তুমি পারবে না আনিয়ে দিতে।
মধুসূদন। পারব না! অবাক করলে তুমি!
কুমুদিনী। না, পারবে না।
মধুসূদন। অসম্ভব দাম নাকি?
কুমুদিনী। হাঁ, টাকায় মেলে না।
মধুসূদন। তোমার দাদা পার্সেল করে পাঠিয়েছেন বুঝি! পাড়াগাঁয়ে এই বুঝি ছিল তোমার জলখাবার!
কুমুদিনীর প্রস্থানোদ্যম। হাত ধরে টেনে এনে
মধুসূদন। একটু বোসো।
কুমুদিনী। দাদার বাড়ি থেকে লোক এসেছিল তাঁর খবর নিয়ে?
মধুসূদন। সেই খবর দেবার জন্যেই তো আজ সকালে তোমার কাছে এসেছি।
কুমুদিনী। দাদা কবে আসবেন?
মধুসূদন। হপ্তাখানেকের মধ্যে।
কুমুদিনী। দাদার শরীর কি আরো খারাপ হয়েছে?
মধুসূদন। কই, তেমন তো কিছু শুনি নি।
কুমুদিনী। দাদার চিঠি কি এসেছে?
মধুসূদন। চিঠির বাক্স তো এখনো খোলা হয় নি, যদি থাকে তোমাকে পাঠিয়ে দেব।
কুমুদিনী। একবার খোঁজ করবে কি?
মধুসূদন। যদি এসে থাকে খাওয়ার পরে নিজেই নিয়ে আসব। যাচ্ছ কোথায়? আর-একটু বোসোই-না। আচ্ছা, একটা কথা তোমাকে জিজ্ঞাসা করি, সেই এলাচদানার ব্যাপারটা নিয়ে এত লজ্জা করলে কেন? ওতে লজ্জার কথা কী ছিল?
কুমুদিনী। ও আমার গোপন কথা।
মধুসূদন। আমার কাছেও বলা চলবে না?
কুমুদিনী। না।
মধুসূদন। এ তোমাদের নুরনগরের চাল, দাদার ইস্কুলে শেখা। ওই চাল তোমার না যদি ছাড়াতে পারি আমার নাম মধুসূদন না।
কুমুদিনী। কী তোমার হুকুম বলো।
মধুসূদন। সেই মোড়ক কে তোমাকে দিয়েছিল বলতে হবে।
কুমুদিনী। হাবলু।
মধুসূদন। হাবলু! তা নিয়ে এত ঢাকাঢাকি কেন?
কুমুদিনী। ঠিক বলতে পারি নে।
মধুসূদন। আর কেউ তার হাত দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে?