নবগোপাল। দাদা, পাঁজি ভুলেছ, এটা সত্যযুগ নয়। জলের নৌকো চালাতে চাও পাঁকের উপর দিয়ে? মনে রেখো তোমার প্রজাদের কথা — ওই আছে তিনু সরকার তোমার তালুকদার, আছে ভাদু পরামানিক, কমরদ্দি বিশ্বেস, পাঁচু মণ্ডল — এদের ঠাণ্ডা করতে চাও সামবেদের মন্ত্র আউড়িয়ে? যাজ্ঞবল্ক্যের নাম শুনলেই কি এদের গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠবে? এদের বুক যে ফেটে যাচ্ছে। তুমি যাও শুতে, মিথ্যে ভেবো না। যা কর্তব্য আমরা তার কিচ্ছু বাকি রাখব না।
[ নবগোপালের প্রস্থান
কুমুর প্রবেশ
কুমুদিনী। দাদা!
বিপ্রদাস। কী কুমু!
কুমুদিনী। এ-সব কী শুনছি কিছুই বুঝতে পারছি নে।
মুখে কাপড় দিয়ে কেঁদে উঠল
বিপ্রদাস। লোকের কথায় কান দিস নে বোন।
কুমুদিনী। কিন্তু ওঁরা এ-সব কী করছেন? এতে কি তোমাদের মান থাকবে?
বিপ্রদাস। ওদের দিকটাও ভেবে দেখিস। পূর্বপুরুষের জন্মস্থানে আসছে, ধুমধাম করবে না? বিয়ের ব্যাপার থেকে এটা স্বতন্ত্র করে দেখিস।
অখিলের প্রবেশ
অখিল। জ্যাঠামশায়, একটা পরামর্শ দাও।
বিপ্রদাস। কেন অখিল, কী হয়েছে?
অখিল। সঙ্গে এক পাল সাহেব — দালাল হবে, কিংবা মদের দোকানের বিলিতি শুঁড়ি — কাল পীরপুরের চরের থেকে কিছু না হবে তো দুশো কাদাখোঁচা মেরে নিয়ে উপস্থিত। আজ চলেছে চন্দনীদহের বিলে। শীতের সময় সেখানে হাঁসের মরসুম — রাক্ষুসে ওজনের জীবহত্যে হবে — অহিরাবণ, মহীরাবণ, হিড়িম্বা, ঘটোৎকচ, ইস্তিক কুম্ভকর্ণের পর্যন্ত পিণ্ডি দেবার উপযুক্ত, প্রেতলোকে দশমুণ্ড রাবণের চোয়াল ধরে যাবার মতো।
অখিল। তোমারই হুকুমে ওই বিলে কেউ শিকার করতে পারে না। সেবার তো জেলার ম্যাজিস্ট্রেটকে পর্যন্ত ঠেকিয়েছিলে। তখন আমরা ভয় করেছিলুম তোমাকেই পাছে সে রাজহাঁস বলে ভুল করে। লোকটা ছিল ভদ্র, মেনে গেল নিষেধ। কিন্তু এরা কেউ