কমলমুখী। তোর জ্বালায় তো আর বাঁচি নে ইন্দু। তুই আবার এ কী জট পাকিয়ে বসে আছিস। ললিতবাবুর কাছে তোকে কাদম্বিনী বলে উল্লেখ করতে হবে না কি?
ইন্দুমতী। তা কী করব দিদি। কাদম্বিনী না বললে যদি সে না চিনতে পারে তা হলে ইন্দু বলে পরিচয় দিয়ে লাভটা কী।
কমলমুখী। ইতিমধ্যে তুই এত কাণ্ড কখন করে তুললি তা তো জানি নে। একটা যে আস্ত নাটক বানিয়ে বসেছিস।
ইন্দুমতী। তোমার বিনোদবাবুকে বোলো, তিনি লিখে ফেলবেন এখন, তার পর মেট্রপলিটান থিয়েটারে অভিনয় দেখতে যাব।
কমলমুখী। তোমার ললিতবাবু সাজতে পারে এমন ছোকরা কি তারা কোথাও খুঁজে পাবে। তুই হয়তো মাঝখান থেকে “ও হয়নি, ও হয়নি” বলে চেঁচিয়ে উঠবি।
ইন্দুমতী। ওই ভাই, তোমার বিনোদবাবু আসছেন, আমি পালাই।
বিনোদবিহারী। মহারানী, আমার বন্ধুরা এলে কোথায় তাঁদের বসাব।
কমলমুখী। এই ঘরেই বসাবেন।
বিনোদবিহারী। ললিতের সঙ্গে আপনার যে বন্ধুর বিবাহ স্থির করতে হবে তাঁর নামটি কী।
কমলমুখী। কাদম্বিনী। বাগবাজারের চৌধুরীদের মেয়ে।
বিনোদবিহারী। আপনি যখন আদেশ করছেন আমি যথাসাধ্য চেষ্ট করব। কিন্তু ললিতের কথা আমি কিছুই বলতে পারি নে। সে যে এ-সব প্রস্তাবে আমাদের কারও কথায় কর্ণপাত করবে এমন বোধ হয় না—
কমলমুখী। আপনাকে সেজন্য বোধ হয় বেশি চেষ্টা করতেও হবে না—কাদম্বিনীর নাম শুনলেই তিনি আর বড়ো আপত্তি করবেন না।
বিনোদবিহারী। তা হলে তো আর কথাই নেই।
কমলমুখী। মাপ করেন যদি আপনাকে একটি কথা জিজ্ঞাসা করতে চাই।
বিনোদবিহারী। এখনি। (স্বগত) স্ত্রীর কথা না তুললে বাঁচি।
কমলমুখী। আপনার স্ত্রী নেই কি।
বিনোদবিহারী। কেন বলুন দেখি। স্ত্রীর কথা কেন জিজ্ঞাসা করছেন।
কমলমুখী। আপনি তো অনুগ্রহ করে এই বাড়িতেই বাস করছেন, তা হলে আপনার স্ত্রীকে আমি আমার সঙ্গিনীর মতো করে রাখতে চাই। অবিশ্যি যদি আপনার কোনো আপত্তি না থাকে।
বিনোদবিহারী। আপত্তি! কোনো আপত্তিই থাকতে পারে না। এ তো আমার সৌভাগ্যের কথা।
কমলমুখী। আজ সন্ধের সময় তাঁকে আনতে পারেন না?