হলা। বউয়ের জন্যে একটা তোমার পুরোনো কাপড়— দেশে পাঠিয়ে দিই জয়জয়কার।
নীরজা। রোশনি, ওকে দে তো ঐ আলনার কাপড়খানা।
রোশনি। সে কি কথা! ও যে তোমার ঢাকাই শাড়ি।
নীরজা। হোক্-না ঢাকাই শাড়ি! আমার কিসের দরকার? কবেই বা আর পরব?
রোশনি। সে হবে না খোঁখী। ওকে তোমার সেই লালপেড়ে কলের কাপড়টা দিয়ে দেব।
হলা। (নীরজার পা ধরে) আমার কপাল ভেঙেছে বউদিদি।
নীরজা। কেন রে? কী হল তোর?
হলা। আয়াজিকে মাসি বলে এসেছি, এতদিন জানতেম হতভাগা হলাকে আয়াজি ভালোই বাসেন। আজ বউদিদি, তোমার যদি দয়া হল উনি কেন দেন বাগ্ড়া? আমার যদি এমন দশা না হবে তবে তোমার হলাকে পরের হাতে দিয়ে তুমি আজ বিছানায় পড়ে!
নীরজা। না রে, তোর মাসি তোকে ভালোই বাসে— এইমাত্র তোর গুণগান করছিল। রোশনি, দিয়ে দাও ওকে কাপড়টা, নইলে ও ধন্না দিয়ে পড়ে থাকবে।
হলা। এই গামছাটা দিয়ে মুড়ে নিই বউদিদি, নইলে দাগ লাগবে।
নীরজা। আচ্ছা আয়া, তুই ঠিক জানিস বাবু বেরিয়ে গেছেন?
রোশনি। নিজের চক্ষে দেখলুম। কী তাড়া! টুপিটা নিতে ভুলে গেলেন।
নীরজা। এমন তো একদিনও হয় নি। সকালবেলায় ফুল একটা দিয়ে যেতেন— সময় হল না। জানি জানি আগেকার দিনের আর কিছুই থাকবে না। আমি থাকব পড়ে আমার সংসারের আঁস্তাকুড়ে নিবে-যাওয়া উনুনের পোড়াকয়লা ঝেঁটিয়ে ফেলবার জায়গায়। সে কোন্ দেবতা এমন বিচার যার?
নীরজা। (বিরক্তিতে) কে আনতে বলেছে?
সরলা। আদিৎদা।
নীরজা। নিজে এলেন না যে?
সরলা। নিয়ুমার্কেটের দোকানে তাড়াতাড়ি যেতে হল চা-খাওয়া সেরেই।