Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (http://rabindra-rachanabali.nltr.org)
চিত্রাঙ্গদা - ১, ৬
চিত্রাঙ্গদা
নিজ ভুজবলে; সাধিব অব্যর্থ লক্ষ্য;
পুরুষের ছদ্মবেশে মাগিব সংগ্রাম
তাঁর সাথে, বীরত্বের দিব পরিচয়।
হা রে মূগ্ধে, কোথায় চলিয়া গেল সেই
স্পর্ধা তোর! যে ভূমিতে আছেন দাঁড়ায়ে
সে ভূমির তৃণদল হইতাম যদি,
শৌর্যবীর্য যাহা কিছু ধুলায় মিলায়ে
লভিতাম দুর্লভ মরণ, সেই তাঁর
চরণের তলে।
কী ভাবিতেছিনু মনে
নাই। দেখিনু চাহিয়া ধীরে চলি গেলা
বীর, বন-অন্তরালে। উঠিনু চমকি;
সেইক্ষণে জন্মিল চেতনা; আপনারে
দিলাম ধিক্কার শতবার। ছি ছি মূঢ়ে,
না করিলি সম্ভাষণ, না শুধালি কথা,
না চাহিলি ক্ষমাভিক্ষা, বর্বরের মতো
রহিলি দাঁড়ায়ে—হেলা করি চলি গেলা
বীর। বাঁচিতাম, সে মূহুর্তে মরিতাম
যদি।
পরদিন প্রাতে দূরে ফেলে দিনু
পুরুষের বেশ। পরিলাম রক্তাম্বর,
কঙ্কণ কিঙ্কিণী কাঞ্চি। অনভ্যস্ত সাজ
লজ্জায় জড়ায়ে অঙ্গ রহিল একান্ত
সসংকোচে।
গোপনে গেলাম সেই বনে
অরণ্যের শিবালয়ে দেখিলাম তাঁরে—
পুরুষের ছদ্মবেশে মাগিব সংগ্রাম
তাঁর সাথে, বীরত্বের দিব পরিচয়।
হা রে মূগ্ধে, কোথায় চলিয়া গেল সেই
স্পর্ধা তোর! যে ভূমিতে আছেন দাঁড়ায়ে
সে ভূমির তৃণদল হইতাম যদি,
শৌর্যবীর্য যাহা কিছু ধুলায় মিলায়ে
লভিতাম দুর্লভ মরণ, সেই তাঁর
চরণের তলে।
কী ভাবিতেছিনু মনে
নাই। দেখিনু চাহিয়া ধীরে চলি গেলা
বীর, বন-অন্তরালে। উঠিনু চমকি;
সেইক্ষণে জন্মিল চেতনা; আপনারে
দিলাম ধিক্কার শতবার। ছি ছি মূঢ়ে,
না করিলি সম্ভাষণ, না শুধালি কথা,
না চাহিলি ক্ষমাভিক্ষা, বর্বরের মতো
রহিলি দাঁড়ায়ে—হেলা করি চলি গেলা
বীর। বাঁচিতাম, সে মূহুর্তে মরিতাম
যদি।
পরদিন প্রাতে দূরে ফেলে দিনু
পুরুষের বেশ। পরিলাম রক্তাম্বর,
কঙ্কণ কিঙ্কিণী কাঞ্চি। অনভ্যস্ত সাজ
লজ্জায় জড়ায়ে অঙ্গ রহিল একান্ত
সসংকোচে।
গোপনে গেলাম সেই বনে
অরণ্যের শিবালয়ে দেখিলাম তাঁরে—
মদন। বলে যাও বালা। মোর কাছে করিয়ো না
কোনো লাজ। আমি মনসিজ ; মানসের
সকল রহস্য জানি।
সকল রহস্য জানি।
চিত্রাঙ্গদা। মনে নাই ভালো
তার পরে কী কহিনু আমি,কী উত্তর
শুনিলাম। আর শুধায়ো না ভগবন্।
শুনিলাম। আর শুধায়ো না ভগবন্।