Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (http://rabindra-rachanabali.nltr.org)
বন-ফুল - ১৫
বন-ফুল
আয় বলি তোরে, আঁচলটি ভোরে
কুড়া-না হোথায় বকুলগুলি!
মাধবীর ভরে লতা নুয়ে পড়ে,
আমি ধীরি ধীরি আনি লো তুলি।
গোলাপ কত যে ফুটেছে কমলা,
দেখে যা দেখে যা বনের মেয়ে!
দেখ্সে হেথায় কামিনী পাতায়
গাছের তলাটি পড়েছে ছেয়ে।
আয় আয় হেথা, ওই দেখ্ ভাই,
ভ্রমরা একটি ফুলের কোলে—
কমলা, ফুঁ দিয়ে দে-না লো উড়িয়ে,
ফুলটা আমি লো নেব যে তুলে।
পারি না লো আর, আয় হেথা বসি
ফুলগুলি নিয়ে দুজনে গাঁথি!
হেথায় পবন খেলিছে কেমন
তটিনীর সাথে আমোদে মাতি!
আয় ভাই হেথা, কোলে রাখি মাথা
শুই একটুকু ঘাসের 'পরে—
বাতাস মধুর বহে ঝুরু ঝুর,
আঁখি মুদে আসে ঘুমের তরে!
বল্ বনবালা এত কি লো জ্বালা!
রাত দিন তুই কাঁদিবি বসে!
আজো ঘুমঘোর ভাঙ্গিল না তোর,
আজো মজিলি না সুখের রসে!
তবে যা লো ভাই! আমি একেলাই
রাশ্ রাশ্ করি গাঁথিয়া মালা।
তুই নদীতীরে কাঁদ্গে লো ধীরে
যমুনারে কহি মরমজ্বালা!
আজো তুই বোন! ভুলিবি নে বন?
পরণকুটীর যাবি নে ভুলে?
তোর ভাই মন কে জানে কেমন।
আজো বলিলি নে সকল খুলে?’
কুড়া-না হোথায় বকুলগুলি!
মাধবীর ভরে লতা নুয়ে পড়ে,
আমি ধীরি ধীরি আনি লো তুলি।
গোলাপ কত যে ফুটেছে কমলা,
দেখে যা দেখে যা বনের মেয়ে!
দেখ্সে হেথায় কামিনী পাতায়
গাছের তলাটি পড়েছে ছেয়ে।
আয় আয় হেথা, ওই দেখ্ ভাই,
ভ্রমরা একটি ফুলের কোলে—
কমলা, ফুঁ দিয়ে দে-না লো উড়িয়ে,
ফুলটা আমি লো নেব যে তুলে।
পারি না লো আর, আয় হেথা বসি
ফুলগুলি নিয়ে দুজনে গাঁথি!
হেথায় পবন খেলিছে কেমন
তটিনীর সাথে আমোদে মাতি!
আয় ভাই হেথা, কোলে রাখি মাথা
শুই একটুকু ঘাসের 'পরে—
বাতাস মধুর বহে ঝুরু ঝুর,
আঁখি মুদে আসে ঘুমের তরে!
বল্ বনবালা এত কি লো জ্বালা!
রাত দিন তুই কাঁদিবি বসে!
আজো ঘুমঘোর ভাঙ্গিল না তোর,
আজো মজিলি না সুখের রসে!
তবে যা লো ভাই! আমি একেলাই
রাশ্ রাশ্ করি গাঁথিয়া মালা।
তুই নদীতীরে কাঁদ্গে লো ধীরে
যমুনারে কহি মরমজ্বালা!
আজো তুই বোন! ভুলিবি নে বন?
পরণকুটীর যাবি নে ভুলে?
তোর ভাই মন কে জানে কেমন।
আজো বলিলি নে সকল খুলে?’