Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (http://rabindra-rachanabali.nltr.org)
বাল্মীকিপ্রতিভা - পঞ্চম দৃশ্য , ১৬
বাল্মীকিপ্রতিভা
কী বলিনু আমি! এ কী সুললিত বাণী রে!
কিছু না জানি কেমনে যে আমি প্রকাশিনু দেবভাষা,
এমন কথা কেমনে শিখিনু রে!
পুলকে পুরিল মনপ্রাণ,মধু বরষিল শ্রবণে,
এ কী! হৃদয়ে এ কী এ দেখি!—
ঘোর অন্ধকার-মাঝে,এ কী জ্যোতি ভায়!
অবাক্!— করুণা এ কার!
কিছু না জানি কেমনে যে আমি প্রকাশিনু দেবভাষা,
এমন কথা কেমনে শিখিনু রে!
পুলকে পুরিল মনপ্রাণ,মধু বরষিল শ্রবণে,
এ কী! হৃদয়ে এ কী এ দেখি!—
ঘোর অন্ধকার-মাঝে,এ কী জ্যোতি ভায়!
অবাক্!— করুণা এ কার!
সরস্বতীর আবির্ভাব
বাল্মীকি। এ কী এ, এ কী এ, স্থিরচপলা!
কিরণে কিরণে হল সব দিক উজলা!
কী প্রতিমা দেখি এ, জোছনা মাখিয়ে
কে রেখেছে আঁকিয়ে
আ মরি কমলপুতলা!
কী প্রতিমা দেখি এ, জোছনা মাখিয়ে
কে রেখেছে আঁকিয়ে
আ মরি কমলপুতলা!
[ ব্যাধগণের প্রস্থান
বনদেবীগণের প্রবেশ
বনদেবী। নমি নমি ভারতী, তব কমলচরণে
পুণ্য হল বনভূমি, ধন্য হল প্রাণ।
বাল্মীকি। পূর্ণ হল বাসনা,দেবী কমলাসনা!
ধন্য হল দস্যুপতি, গলিল পাষাণ।
বনদেবী। কঠিন ধরাভূমি এ, কমলালয়া তুমি যে—
হৃদয়কমলে চরণকমল করো দান।
বাল্মীকি। তব কমলপরিমলে রাখো হৃদি ভরিয়ে,
চিরদিবস করিব তব চরণসুধা পান।
[ দেবীগণের অন্তর্ধান
কালী-প্রতিমার প্রতি বাল্মীকি
শ্যামা, এবার ছেড়ে চলেছি মা।
পাষাণের মেয়ে পাষাণী, না বুঝে মা বলেছি মা!
এত দিন কী ছল করে তুই, পাষাণ করে রেখেছিল!
পাষাণের মেয়ে পাষাণী, না বুঝে মা বলেছি মা!
এত দিন কী ছল করে তুই, পাষাণ করে রেখেছিল!
আজ আপন মায়ের দেখা পেয়ে, নয়ন-জলে গলেছি মা!
কালো দেখে ভুলি নে আর, আলো দেখে ভুলেছে মন—