সেদিন আমাদের ছিল খোলা সভা
আকাশের নিচে
রাঙামাটির পথের ধারে।
ঘাসের'পরে বসেছে সবাই।
দক্ষিণের দিকে শালের গাছ সারি সারি,
দীর্ঘ, ঋজু, পুরাতন —
স্তব্ধ দাঁড়িয়ে,
শুক্লনবমীর মায়াকে উপেক্ষা ক ' রে।
দূরে কোকিলের ক্লান্ত কাকলিতে বনস্পতি উদাসীন।
ও যেন শিবের তপোবন-দ্বারের নন্দী,
দৃঢ় নির্মম ওর ইঙ্গিত।
সভার লোকেরা বললে,
‘ একটা কিছু শোনাও, কবি,
রাত গভীর হয়ে এল । '
খুললেম পুঁথিখানা,
যত পড়ে দেখি
সংকোচ লাগে মনে।
এরা এত কোমল, এত স্পর্শকাতর,
এত যত্নের ধন।
এদের কণ্ঠস্বর এত মৃদু,
এত কুণ্ঠিত।
এরা সব অন্তঃপুরিকা,
রাঙা অবগুণ্ঠন মুখের'পরে।
তার উপরে ফুলকাটা পাড়,
সোনার সুতোয়।
রাজহংসের গতি ওদের,
মাটিতে চলতে বাধা।
প্রাচীন কাব্যে এদের বলেছে ভীরু,
বলেছে, বরবর্ণিনী।